সিটি ভোট : ৩০০ ভোটারের সই লাগবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের পর দেশে দলীয়ভাবে প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এর জন্য এ নির্বাচনের বিধিমালা সংশোধন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

 

দলের বাইরে মেয়র পদে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে তাঁর ৩০০ ভোটারের সমর্থন লাগবে। এমন বিধান রেখে বিধি সংশোধন করেছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠান। এখন  ভেটিংয়ের (যাচাই-বাছাই) জন্য আইন মন্ত্রাণালয়ে পাঠানো হবে।

 

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দলভিত্তিক প্রথম সিটি নির্বাচন করতে বিধিতে সংশোধন আনা হচ্ছে। দলের প্রত্যয়নে দলীয় মনোনয়ন নিতে হবে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ৩০০ ভোটারের সমর্থনযুক্ত তালিকা জমা দিতে হবে প্রার্থীকে। এ সংক্রান্ত অনুমোদন কমিশন দিয়েছে। এখন আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য তা পাঠানো হবে।

 

ইসি সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকারের পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের মতো সিটি নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না সরকারি সুবিধাভোগীরা। স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা,২০১৬-তে এই বিধান যুক্ত হচ্ছে। খসড়া বিধিমালার ২২ ধারা অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। একইভাবে কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে উক্ত ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল তাঁর ভোট দেওয়ার জন্য ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন।

 

বিধিমালা অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মোট ভোটারের ১ শতাংশ এবং পৌরসভা নির্বাচনে ১০০ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকা মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় জমা দিতে হয়। তবে দলভিত্তিক ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয় না।

 

সূত্র আরো জানায়, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে বিধি সংশোধনের কাজ শেষ করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে হাত দিতে চায় ইসি। ইসির কর্মকর্তারা জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটির নির্বাচন একই দিনে করতে চায় ইসি। সর্বশেষ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট একদিনে হয়েছিল। দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার ক্ষেত্রে বছর শেষে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী ও অষ্টম শ্রেণীর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

 

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার কর্মকর্তারা জানান, ভোটের পর নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ২০১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটির এবং ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা সিটির প্রথম সভা হয়। প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর মেয়াদ সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিদের। মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করারও আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের ২৬ ডিসেম্বর ও কুমিল্লার ৮ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ বছরের ২৯ জুন থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ও  ১২ আগস্ট থেকে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কুমিল্লার ভোট করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

 

গত বছরের নভেম্বরে স্থানীয় সরকারের সিটি, উপজেলা, পৌর ও ইউপি ভোট দলীয় প্রতীকে করতে বিল পাস হয়। এ বিধান অনুযায়ী ডিসেম্বরে পৌরসভা ও চলতি বছরের মার্চ-জুনে ইউপি ভোট দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হয়।

 

সূত্র:এনটিভি