নিজস্ব প্রতিবেদক :
কল্পনা সিনেমা হলের নামে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি এলাকার একটি মোড়ের নাম ‘কল্পনা মোড়’। নিউ মার্কেট এলাকার উপহার সিনেমা হলের নামে হয়েছে ‘উপহার মোড়’। বর্নালী হলের নামে হয়েছে ‘বর্নালী মোড়’। রাণীবাজার এলাকায় অলোকা হলের নামে ‘অলোকার মোড়’।
বর্তমানে কোনো নাম-নিশানা না থাকলেও হলগুলোর নামেই পরিচিত রাজশাহী নগরীর কয়েকটি মোড়। নাম দেখেই বোঝা যায় এক সময় রাজশাহী নগরীতে ছিল বেশ কয়েকটি সিনেমা হল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী নগর ও উপকণ্ঠে সাতটি সিনেমা হল ছিল। আশির দশক থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ভালোই চলছিল রাজশাহীর সিনেমা হল। লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০১০ সালের পর জেলায় একে একে বন্ধ হতে থাকে সিনেমা হল।
সর্বশেষ ‘উপহার’ সিনেমা হলটি বন্ধ হয় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে। এরপরই সিনেমা দেখা থেকে বঞ্চিত ছিলেন রাজশাহীবাসী। চাইলেও আর বড় পর্দায় বিনোদনের স্বাদ নিতে পারতেন না দর্শকরা। প্রায় দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর রাজশাহী সিনেমা হলের খরা কাটল।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজশাহী হাইটেক পার্কে উদ্বোধন করা হল একটি সিনেমা হল। বিখ্যাত স্টার সিনেপ্লেক্স এটি পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ‘মুজিব আমার পিতা’ নামের একটি সিনামা চলানো হয়।
তথ্য মতে, রাজশাহীতে হাইটেক পার্কের একটি অংশে রয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্সের হল। এতে রয়েছে ১৭২টি আসন। এখানে সিনেমার পাশাপাশি আইটি কর্তৃপক্ষের ট্রেনিংয়ের কাজে ব্যবহার হবে। ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে হলটি নির্মাণ হয়েছে।
রাজশাহী বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক ফজলুর হক বলেন, রাজশাহী হাইটেক পার্কের একটি অংশ হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র সিনেমা দেখানো হবে এমনটি নয়। পাশাপাশি এখানে পার্কের সব প্রতিষ্ঠান তাদের প্রজেক্টের ট্রেনিং, অডিও ভিজুয়াল দেখাতে পারবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, সোমবার ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী হাইটেক পার্কের বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম, জয় সিলিকট টাওয়ার ও রাজশাহী সিনেপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছেন। আমাদের পুরো প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি। আমাদের প্রজেক্টের এখন পর্যন্ত ৮৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ হতে আরও ছয়মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
স্টার সিনেপ্লেক্স মার্কেটিং বিভাগের কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, রাজশাহীতে স্টার সিনেপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়েছে। এর আগে ঢাকার বাহিরে চট্টগ্রামে আমাদের শাখা আছে। এরপর রাজশাহীতে যাত্রা শুরু করল স্টার সিনেপ্লেক্স।
এদিকে, রাজশাহীবাসীর সিনেমা দেখার যে অভাব তা সিনেপ্লেক্স কিছুটা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করছেন রাজশাহীর চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তবে মূল দর্শকের চাহিদা পূরণে প্রেক্ষাগৃহ চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. মোজাম্মেলে হোসেন সাজ্জাদ বকুল বলেন, রাজশাহীবাসী একটি দীর্ঘ সময় হলে গিয়ে সিনেমা দেখা থেকে বঞ্চিত ছিল। রাজশাহীতে স্টার সিনেপ্লেক্স চালু আমাদের জন্য বড় সুখবর। এটি আমাদের বহুদিনের চাওয়াকে পূরণ করল। তবে রাজশাহীবাসীর আয়ের ওপর টিকিটের দাম নির্ধারণ করতে হবে। যাতে সাবই মিলে এর সুবিধা নিতে পারে।