সাকিব কি তিনে জায়গা হারাচ্ছেন!

হাসতে হাসতে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করলেন ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ। শরীরী ভাষাতেও আত্মবিশ্বাসের দ্যুতি। কিন্তু প্রথম প্রশ্নটিই হলো যেন ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে, দুই প্রস্তুতি ম্যাচে হারের পরও আপনারা কতটা আত্মবিশ্বাসী!

মাহমুদুল্লাহর জবাব, ‘প্রস্তুতি ম্যাচের হারে মোটেও প্রভাব পড়বে না। আমরা আগের সিরিজ থেকেই আত্মবিশ্বাস নিয়েছি। আমাদের প্রস্তুতিও অনেক ভালো। প্রথম বল  থেকেই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’

ঘরের মাঠে যেভাবে বেশি স্পিনার নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেন, এখানেও কি টিম কম্বিনেশনে স্পিনারদের আধিক্য থাকবে? ‘না, না স্পিনারদের কোনো আধিক্য থাকবে না!’ হাসতেই বললেন, টাইগার ক্যাপ্টেন।

 

প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে না ভাবলেও ওই ম্যাচের পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে টিম কম্বিনেশনে একটা বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। তিনে সাকিব আল হাসানের জায়গায় দেখা যেতে পারে সৌম্য সরকারকে। ঘরের মাঠে দুই সিরিজে ব্যর্থ হলেও, সৌম্য দুই প্রস্তুতি ম্যাচে দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলেছেন ২৬ বলে ৩৪ রানের ইনিংস, আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৭। দুই ইনিংসই একাদশে সৌম্যর জায়গা পাকা করে দিয়েছে। অন্যদিকে নিজের পছন্দের জায়গা ছেড়ে দিতে হচ্ছে সাকিবকে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘দুই প্রস্তুতি ম্যাচেই  সৌম্য খুব ভালো ব্যাটিং করেছে, বলও খুব ভালো করছে। তাকে ওপেনিং অথবা  তিন নম্বরের জন্যও ভাবা হচ্ছে। কালকে (আজ) আপনারা দেখতে পারবেন আমাদের টিম কম্বিনেশন কেমন হয়। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে  যে দল নিয়ে খেলেছি খুব সম্ভবত এ ম্যাচেও এমন দল হবে।’

আইপিএলের ফাইনাল খেলে গতকাল সকালেই সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ওমানে এসেছেন সাকিব। বিকালে অনুশীলনও করেছেন। শরীরে ক্লান্তির ছাপ থাকলেও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ক্যাপ্টেন, ‘সাকিব খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। একটু ক্লান্ত হয়তো।  খেলেই ভ্রমণ করে এসেছেন।’

তবে বাংলাদেশের চিন্তার বড় জায়গা হচ্ছে, মিডল অর্ডারে ভরসার প্রতীক মুশফিকুর রহিমের ফর্মে না থাকা। দুই প্রস্তুতি ম্যাচেও রান পাননি। মিস্টার ডিপেন্ডেবলকে নিয়ে মাহমুদুল্লাহর ভাষ্য, ‘মুশফিকের বিষয়টা আমরা সবাই জানি যে মুশফিক আমাদের দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় অনেক ক্রিকেটারের বিশেষ করে এই ফরম্যাটে ১/২ টা ম্যাচ বা ৩/৪ টা ম্যাচ অনেক সময় খারাপ যেতে পারে। ওর মতো ক্যালিবারের প্লেয়ারকে নিয়ে আমাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। বছরের পর বছর তিনি প্রমাণ করে এসেছেন যে তিনি কতটা চ্যাম্পিয়ন  খেলোয়াড়। এটা নতুন করে কিছু বলার নেই। আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে এবং আমরা সবাই বিশ্বাস করি যে দলের সঠিক সময়ে তিনি ফর্মে ফিরে আসবেন। এটা  কেবলই সময়ের ব্যাপার মাত্র।’

বাংলাদেশ দুই প্রস্তুতি ম্যাচে হারলেও স্বাগতিক ওমান ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে এই মাঠে এক ম্যাচে দুই শতাধিক রান করেছিল। এই উইকেট নিয়ে কিছুটা অভিজ্ঞতা তো আছেই। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ম্যাচের পর পিচের কন্ডিশন নিয়ে বোলার ও ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করেছিলাম। পিচের কন্ডিশন ভালো ছিল এবং স্পোর্টিং উইকেট ছিল। আমি আশা করি ওই রকমই কন্ডিশন থাকবে। আমার মনে হয় যেকোনো কন্ডিশনের জন্যই প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন মানসিকভাবে। উইকেট যদি স্লো হয় কিংবা বাউন্স হয়… আমরা জানি না কি! যদি স্পোর্টিং উইকেট হয় তাহলে মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য আমাদের মধ্যে থাকবে এবং ওই মানসিকতা আমাদের রয়েছে। আমি আশা করি খুব ভালো উইকেট হবে এবং আমরা ভালো করব।’

টি-২০তে একটা বড় রোল থাকে পিঞ্চহিটারের। যিনি দ্রুত দলীয় সংগ্রহ বাড়াতে ভূমিকা রাখেন। কিন্তু বাংলাদেশ দলে  তো আন্দ্রে রাসেল কিংবা ক্রিস গেইলের মতো হিটার  নেই। তবে পিঞ্চহিটার না থাকলেই যে ভালো করা যায় না, তা বিশ্বাস করেন না মাহমুদুল্লাহ। তিনি বরং পিঞ্চহিটারের  চেয়ে স্কিল হিটারে বেশি মনোযোগী। ক্যাপ্টেন বলেন, ‘আপনি যদি চিন্তা করেন কেন উইলিয়ামসনকে (নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক), তাকে পাওয়ার হিটার বলতে পারব? তিনি খুবই দক্ষ হিটার এবং স্কিলড ব্যাটসম্যান। আমার মনে হয়, আমাদের ব্যাটিংয়ের শক্তির বড় জায়গা স্কিল হিটিং। আমার মনে হয় দল হিসেবে আমাদের এই ক্ষমতা আছে। মাঠে এগুলো কাজে লাগাতে পারলে ব্যাটিং ইউনিটের কাছে ভালো কিছু আশা করতে পারি।’

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন