সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব : সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের অজুহাত

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব করার পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ এবং তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব গণমাধ্যমে নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন “জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনের নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব এর ঘটনা অস্বাভাবিক, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক এবং তা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের অজুহাত। নৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বা আইনের শাসনের তাড়নায় সাংবাদিক সমাজের বিরুদ্ধে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও নির্যাতন, সংবাদমাধ্যমে অঘোষিত সেন্সরশিপ এবং সর্বোপরি নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সরকার সংকুচিত করে দিয়েছে। সাংবাদিকতা এবং সংবাদপত্র এক নজিরবিহীন প্রতিকূলতার মুখে পড়েছে।

রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ‘গণমাধ্যমে’র স্বার্থ রক্ষা ও অধিকার আদায়ে সংগ্রামরত সংগঠনগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতার উপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করার এই অপকৌশলকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে।

কোন সাংবাদিক বা ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত দুর্নীতির অবশ্যই তদন্ত হতে পারে কিন্তু যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেকটাই রুদ্ধ হয়ে পড়েছে, যখন গণমাধ্যম প্রচণ্ড রকমভাবে সংকটগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তখন সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব করার পদক্ষেপ কোনক্রমেই ন্যায় সঙ্গত নয়। এসব সিদ্ধান্ত সরকারের চরম অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিহীন সমাজে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতাবোধ গভীর হবে এবং অর্থনৈতিক সংকট সমগ্র রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।

দুর্নীতি সন্ত্রাস মোকাবেলায় ও রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক ও মানবিক করার প্রয়োজনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য। যতদিন রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে সাংবাদিকসহ পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হবে ততদিন পর্যন্ত সাংবাদমাধ্যমের উপর নির্বতন চলতেই থাকবে। তাই আইন প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকসহ পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ সাংবিধানিক ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

সুতরাং রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ অর্থাৎ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সাংবাদিকসহ সকলকে সোচ্চার ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন