সরকারের ডাকে সাড়া দেননি নৌযান মালিকরা, শ্রমিকরা অনড় ধর্মঘটে

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবি নিয়ে সরকার আয়োজিত সভায় অংশ নেননি মালিকেরা। এ কারণে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে ওই সভা।

তবে সভায় দেশের সার্বিক দিক বিবেচনা করে নৌধর্মঘট স্থগিত করতে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।  খোরাকি ভাতা দেয়া না হলে ধর্মঘট থেকে সরতে রাজি নন শ্রমিক নেতারা।  দাবি আদায় না হলে সোমবার মধ্যরাত থেকে ধর্মঘটের দিকে যাচ্ছে সংগঠনটি।  সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

শ্রমিক ধর্মঘট প্রত্যাহার ও শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে শনিবার বিকালে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।  সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন ও শ্রমিক নেতারা অংশ নেন।

সভায় নৌযান মালিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা অংশ নেননি।  তবে রোববার বিআইডব্লিউটিএতে পৃথকভাবে বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছেন মালিকেরা।

সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক  বলেন, মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি নন।  তারা আলাদাভাবে বৈঠকে বসবেন।  দুই পক্ষ এক বৈঠকে না বসায় ধর্মঘট স্থগিতের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।  আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।  বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, ধর্মঘট পালন মুখ্য নয়, মুখ্য বিষয় হচ্ছে আমাদের দাবি আদায়। দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসলেও তা মানেননি মালিকেরা। বৈঠকেও তারা আসলেন না।  তিনি বলেন, অন্তত খোরাকি ভাতা দিলেও আপাতত ধর্মঘট স্থগিত করা যায়।  কিন্তু কোনো দাবি না মানলে এ অবস্থা থেকে সরে আসার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল সংস্থার প্রেসিডেন্ট মাহবুবউদ্দীন আহমদ বীরবিক্রম বলেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন কোনো সিবিএ সংগঠন নয়।  আমরা বলেছি, এটি সিবিএ রূপ নিয়ে আসুক তারপর বৈঠকে বসব।  দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রমিকদের বেতন কাঠামো নিয়ে ২০১৬ সালে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।  ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫ বছর ওই গেজেটের কার্যকারিতা রয়েছে। ওই সময়ের পরে ভাতার দাবির বিষয় আসতে পারে, এর আগে নয়।

সভা সূত্রে জানা গেছে, আলোচনায় নৌপথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে আইন প্রয়োগের নামে নৌযান শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ, নৌশ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, জীবন বীমা প্রবর্তন, প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।  এজন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত রাখতে শ্রমিকদের অনুরোধ জানান বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক।  সভায় শ্রম অধিদফতর, নৌপুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।

 

সূত্রঃ যুগান্তর