সনদ সংশোধন আটকে রেখে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা এক নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই কর্মকর্তার হাত থেকে বাঁচতে ওই নারী দুই হাজার টাকা ঘুষ দিলেও কাজ হয়নি। এমন অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম জাহিদুর রহিম। তিনি শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক)। সনদ ও রেকর্ডস শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও তিনি। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. অলীউল আলম বুধবার এই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। কেন তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা তাকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কয়েকমাস আগে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ওই নারী সনদে তার বাবা-মায়ের নাম সংশোধনের আবেদন করেন শিক্ষা বোর্ডে। এরপর শিক্ষা বোর্ডের নাম ও বয়স সংশোধন কমিটির ২৭৮তম সভায় আবেদনটি অনুমোদন করা হয়। শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম বাকি প্রক্রিয়া শেষ করার কথা। কিন্তু এরমধ্যে কয়েকমাস কেটে গেলেও তিনি ওই নারীর কাজটি করেননি। ওই নারী জাহিদুর রহিমের সঙ্গে অফিসে গিয়ে দেখা করলে তিনি বিয়ের প্রস্তাব দেন। এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করে ওই নারীকে অশালীন প্রস্তাব দেন তিনি। জাহিদুর রহিমের হাত থেকে বাঁচতে ওই নারী তাকে দুই হাজার টাকা ঘুষও দেন। কিন্তু তাতেও তার কাজ হয়নি।
শিক্ষা বোর্ডের নাম ও বয়স সংশোধন কমিটির একজন সদস্য জানান, জাহিদুর রহিম কাজ করে না দিয়ে প্রতিনিয়ত অশালীন প্রস্তাব দিতে থাকায় ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। কর্মকর্তারা মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বোর্ডের নাম ও বয়স সংশোধন কমিটির ২৮৩তম সভায় ওই নারীকে উপস্থিত থাকতে বলেন। সে অনুযায়ী ওই নারী তার মাকে নিয়ে বোর্ডের সভায় হাজির হন। সেখানে কমিটির সদস্যরা বিষয়টি উত্থাপন করেন। সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও কাজ না করে ওই নারীকে যৌন হয়রানি ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জাহিদুর রহিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়।
এ সময় কমিটির ১৭ জন সদস্যের সামনেই জাহিদুর রহিম অত্যন্ত অশোভন আচরণ করেন। তিনি কমিটির সদস্যদেরও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন এবং বিনা অনুমতিতে কমিটির সভা থেকে বেরিয়ে যান। পরে এ সভায় জাহিদুর রহিমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী পরদিন বোর্ড চেয়ারম্যান এই কর্মকর্তাকে শোকজ করেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহিমের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।