শ্বশুরের জমি না পেয়ে ২য় বিয়ে করলেন জামাই, প্রথম স্ত্রীর আত্মহত্যা

জামাইয়ের চাপে ও একমাত্র মেয়ে মিনা খাতুনের (৩৫) সুখের কথা চিন্তা করে সব জমি মেয়েকে লিখে দিয়েছেন বাবা। এতে শ্বশুর মোন্তাজ আলীর ওপর ক্ষেপে যান জামাই খালেক। ক্ষুদ্ধ হয়ে ২য় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকেন।

এ ঘটনায় স্বামীর অবহেলা আর নির্যাতনে মিনা খাতুন সোমবার (২২ জুন) নিজ বাড়ির রান্নাঘরে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে মিনার স্বজনরা বলছেন তার মৃত্যু রহস্যজনক।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার মন্ডুতোষ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ দুুপুরে লাশ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

মৃত মিনার মামা সাহেব আলী জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে পারিবারিকভাবে চাচাতো বোন মিনা খাতুনকে বিয়ে করেন আব্দুল খালেক। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর (চাচা) মন্তাজ আলীকে জামাই খালেক সব সম্পত্তি তার নামে লিখে দিতে বলেন। এ নিয়ে দফায় দফায় ঝামেলা করতেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মিনার বাবা মন্তাজ আলী মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার মোট ১২ বিঘা জমি মিনার নামে দানস্বত্ত্ব হিসেবে রেজিস্ট্রি করে দেন।

এতে আব্দুল খালেক আরও রাগান্বিত হন।তার নামে কেন শ্বশুর জমি দিলো না এ ক্ষোভে তিনি মিনাকে মারধর করতেন। শুধু তাই নয় কিছুদিন আগে তিনি ২য় বিয়ে করেন এবং তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান এবং একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। মিনার সাথে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। তিনি মাঝে মধ্যে গ্রামে আসতেন। তবে মিনাকে তিনি স্ত্রীর মর্যাদা দেননি।

এমনকি মিনার দেবর শানিল হোসেনও (২৮) তার ওপর নির্যাতন করতেন।সম্প্রতি শানিল হোসেন মিনাকে মারধর করে তার হাত ভেঙে দেন।এছাড়া স্বামীর বাড়ির অন্য সদস্যরাও খালেকের পক্ষ নিয়ে মিনার সাথে খারাপ ব্যবহার করতেন।

মন্ডুতোষ গ্রামের আব্দুল আলিম ও জয় হোসেনসহ বেশ ক’জন জানান. এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তারা বলতে না পারলেও মানসিক যন্ত্রণা ও নির্যাতনের কারণেই মিনার মৃত্যু হয়েছে এটা তার নিশ্চিত বলে জানান। সোমবার সন্ধ্যায় মিনার মামা সাহেব আলী সাংবাদিকদের জানান, রান্না ঘরের ডাবের সাথে মিনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। সেখান থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ওই ডাব থেকে মেঝের দূরত্ব এতো বেশি নয় যেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করা যায়। এ মৃত্যুর পেছনে রহস্য রয়েছে বা তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ ঘটনা ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, প্রাথমিক আলামত দেখে এটি আত্মহত্যাই বলেই মনে হয়েছে। তবে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে বলে তিনি জানান।\

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ