শোকের মাসে রাবি উপাচার্যকে ফুলেল শুভেচ্ছা : ফুলের তোড়া পুড়িয়ে দিলো ‘এডহক’ নিয়োগপ্রাপ্তরা

বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের থেকে ফুলের তোড়া নিযে যাচ্ছে এডহক নিযোগপ্রাপ্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শোকাবহ আগস্টে সাধারণত ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় থেকে বিরত থাকা হয়। কিন্তু গতকাল সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামকে ফুলেল শুভেচ্ছার আয়োজন করেছিল জাতীয়তাবাদী অফিসার্স পরিষদের সদস্যরা। বিষয়টি জানার পর এই আয়োজন প- করে দিয়ে ফুলের তোড়া তাদের থেকে কেড়ে নিয়ে প্রশাসনের ভবনের সামনে পুড়িয়ে দেয় সদ্য ‘এডহক’ এ নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সোমবার (০২ জুলাই) দুপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী অফিসার সমিতির আহ্বায়ক একেএম নজরুল ইসলাম শেলীর নেতৃত্বে ১৫–-২০ জন সদস্য ফুল নিয়ে রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান–উল–ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে সাড়ে ১২টার দিকে সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে ‘এডহক’ এ নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের প্রায় ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করেন। তাঁরা উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে বিএনপিপন্থি অফিসারদের শোকের মাসে ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা দিতে আসার কারণ জানতে চান। সেখানে উচ্চবাচ্য শুরু করলে প্রক্টর লিয়াকত আলী এসে তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের থেকে ফুলের তোড়াটি নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে পুড়িয়ে দেয়।

এ বিষয়ে ‘এডহক’ এ নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন বলেন, এখন শোকের মাস চলছে। ঠিক এই মুহূর্তে বিএনপি–জামাতের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসরেরা রুটিন উপাচার্যকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে গিয়েছিলেন। আমরা বিষয়টি দেখে আর্দশগত জায়গা থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানাই। উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে গিয়ে আমরা ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করি। পরে প্রক্টর স্যার আমাদের আশ্বাস দেন ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন না উপাচার্য।

জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী অফিসার্স পরিষদের আহ্বায়ক একেএম নজরুল ইসলাম শেলী বলেন, আমরা আগেই উপাচার্যের কাছ থেকে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নিয়েছিলাম। সাধারণত সৌজন্য সাক্ষাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সে বিবেচনায় আমরা ফুল নিয়ে এসেছি। এখানে আসার পর উপাচার্য তাঁর সচিবের মাধ্যমে জানান, তিনি ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন না। তাই আমরা তো ফুলের তোড়া সরিয়ে রাখি। তাছাড়া আগস্টের কোনো কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা ছিল না। সর্বপোরি এটা উদ্দেশ্যমূলক ছিল না।

এ বিষয়ে রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, কে বা কারা কী নিয়ে এল সেটা তো তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু আমি কারো পক্ষ থেকে কী গ্রহণ করব সেটা আমার ওপর নির্ভর করে। আজকে বিএনপিপন্থী কিছু অফিসার আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। আমি তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছি কিন্তু ফুলের তোড়া গ্রহণ করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এএইচ/এস