শূন্য সাড়ে ২২ হাজার পদ, নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি আসছে

সারাদেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এই শূন্য পদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিবন্ধিত প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হবে। এরপর মেধা তালিকার ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। নভেম্বরের মধ্যে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এনটিআরসিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারাদেশের এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। অনলাইন ও টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে সংগৃহীত এ তালিকায় দেখা গেছে, অনুমোদিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার পদ শূন্য রয়েছে। তালিকাটির এখন যাচাই-বাছাই চলছে। এরই অংশ হিসেবে গত ২৬ আগস্ট দেশের সকল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে নিয়ে সভা করেন এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন। সেখানে তালিকাটি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চূড়ান্ত করার আলোচনা হয়। আকরাম হোসেন এই তালিকা সরেজমিনে যাচাই করতে থানা/উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, শূন্য পদের তালিকাটি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। সভার নির্দেশনা অনুসারে, তালিকা অনুযায়ী শূন্য পদের অনুমোদন রয়েছে কি-না, নারী কোটায় পুরুষ শিক্ষকের চাহিদা অথবা নারী কোটা পূরণ, চাহিদার চেয়ে অধিক শূন্য পদ দেখানো হয়েছে কি-না, তা যাচাই করা হবে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে প্রথমে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে যাচাই করবেন। পরে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা চূড়ান্ত করে তা এনটিআরসিএতে পাঠাবেন। তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়ার পর ১ থেকে ১৫তম নিবন্ধনের অপেক্ষমান প্রায় আট লাখ প্রার্থীর মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এনটিআরসিএ।

জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সারাদেশ থেকে শূন্য পদে বিভিন্ন বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রায় সাড়ে ২২ হাজার তালিকা পেয়েছি। বর্তমানে তা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। তালিকা চূড়ান্ত করে নিবন্ধিত প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন, গত বছর নিয়োগ কার্যক্রমে নানা ধরনের ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ে, এসব সমস্যা এড়াতে নতুন এই তালিকা নির্ভুল করতে কয়েক দফায় যাচাই-বাছাই করা হবে। সে তালিকার ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদে নিয়োগ দেয়া হবে।

জানা গেছে, এবার শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে ১৮০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হতে পারে। একজন প্রার্থী একাধিক প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সুযোগ পাবেন। প্রাপ্ত সব আবেদন জাতীয় মেধার ভিত্তিতে বাছাইপূর্বক বিধি মোতাবেক প্রতিটি পদের বিপরীতে চূড়ান্তভাবে একজনকে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠাবে এনটিআরসিএ। এরপর নির্বাচিতদের মোবাইল ফোনে মেসেজের মাধ্যমে সেই তথ্য জানিয়ে দেয়া হবে।

এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা জানান, মেধা তালিকায় প্রথম ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যোগদান না করলে দ্বিতীয় জনকে সে পদের জন্য মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে যেসব প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর পেরোয়নি তারাই এ নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন। এনটিআরসিএ’র ১ থেকে ১৫তম নিবন্ধনের প্রার্থীদের এক্ষেত্রে আবেদন করার সুযোগ থাকছে। তবে ১৬তম নিবন্ধনের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফল দুই মাসের মধ্যে প্রকাশ করা সম্ভব হলে এ স্তরের উত্তীর্ণরাও আবেদন করার সুযোগ পারেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন বলেন, ১৬তম নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত এ ফল প্রকাশের চেষ্টা চলছে। এ স্তরের প্রার্থীদের তৃতীয় ধাপে শূন্য পদে আবেদনের সুযোগ দিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে লিখিত-মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের চেষ্টা করা হবে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ