শুধু মন ভালো রাখাই না মেধাকে বাড়িয়ে তোলে চায়ের আড্ডা

খবরের কাগজ হাতে নিয়ে সকাল সকাল এক কাপ চা না খেলেই যেনো জমেই না। চায়ের কাপের এই আড্ডা শুধুমাত্র মনই ভালো রাখে না বাড়ায় আমাদের মেধা ক্ষমতাকেও। এক কাপ চায়ে চিন্তা ভাবনা, যুক্তিতে আসতে পারে পরিবর্তন। যেকোন প্রতিক্রিয়াতেও দ্রুততা আনতে পারে নিয়মিত চা পান।

২০০৬ সাল থেকে এই বিষয়ে গবেষণা করছে নিউ কাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টার প্রজেক্ট। গবেষণার প্রধান, চিকিৎসক এডওয়ার্ড ওকেলো জানাচ্ছেন, গত ১৫ বছর ধরে ৮৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন তারা। আর তা থেকে সামনে এসেছে চা-পান সংক্রান্ত অভিনব সব তথ্য। দেখা গিয়েছে, এই বয়সি যে সমস্ত ব্যক্তি চা-প্রেমী ও নিয়মিত অন্তত পাঁচ কাপ করে চা পান করেন, তারা মেধা আর মননে সমবয়সিদের থেকে অনেকটা এগিয়ে।

চায়ের উপাদান সংক্রান্ত উপকারিতা যত না কাজ করে, তার চেয়ে চা বানানো আর চা নিয়ে বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে গল্প-আড্ডা দেওয়ার অভ্যাসই বেশি প্রভাব ফেলেছে বলে মত চিকিৎসকদের। নিয়মিত চা-পানকারীদের মনসংযোগ যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে গতি। এমনকি গাড়ি চালানো, শব্দছক, সুদোকুর সমাধানের ক্ষেত্রেও চা-প্রেমীদের দক্ষতা বাকিদের তুলনায় বেড়েছে বলে জানিয়েছে নিউ কাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা।

যে কোনও সামাজিক মেলামেশাই আমাদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। চায়ের আড্ডা নিঃসন্দেহে সেই সামাজিক মেলামেশার অনেকটা সুযোগ করে দেয়। এটা আমাদের ভাল থাকায় প্রভাব ফেলে। আমাদের ভাল থাকতে সাহায্য করে। আর আমাদের মেধা, দক্ষতা, মনসংযোগ সবই নির্ভর করে এই ভাল থাকার উপর।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছে, স্কুলে যে শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে আমাদের পছন্দ হত, তাদের বিষয়টি আমরা বেশি ভাল করে পড়তাম। এক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তেমনই। চা তো আমরা অচেনা অজানা মানুষের সঙ্গে খেতে যাই না। আমাদের কাছের বন্ধুদের সঙ্গে, যাদের সঙ্গে একটু গল্প করা যায়, মনের কথা বলতে ভাল লাগে, তাদের সঙ্গেই বসে চা-খাই আমরা। এই ভাল লাগাটাই আমাদের মনে প্রভাব ফেলে। একটা পজিটিভিটি তৈরি করে। আর এই ইতিবাচক পরিবেশই আমাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।

পুষ্টিবিদের কথায়

চা যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস যা আমদের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে মেরামত করা বা ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারে। চায়ের উপাদান কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হার্ট ভালো রাখে। পেটের সমস্যাও দূর করে চা। আর এই শরীর ভালো থাকাই আমাদের মনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ