শুক্রবার ১৪ চাকরির পরীক্ষা, বিপাকে পরীক্ষার্থীরা

একই দিনে ১৪টি পরীক্ষা হওয়ায় কোনো কোনো প্রার্থীর ৪-৫টি পরীক্ষা পড়েছে ওই দিনে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, তিতাস গ্যাস ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পরীক্ষাসহ শুক্রবার মোট চারটি পরীক্ষা পড়েছে। এর মধ্যে ২টি পরীক্ষা একই সময়ে। এসব চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে একই সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা লেখা ছিল না, তাই আবেদন করেছি। এ চারটি চাকরিতে আবেদন করতে খরচ হয়েছে এক হাজার ৬৭৩ টাকা। আমার মতো বেকারের জন্য এ টাকা অনেক টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় থাকলে আমার কষ্টের টাকা নষ্ট হতো না।

নাসরিন সুলতানা নিপা নামের আরেক চাকরিপ্রার্থী  বলেন, একদিনে একেকজন চাকরিপ্রার্থীর কয়েক হাজার টাকা জলে যাচ্ছে। যেসব পরীক্ষা দিতে পারছি না সেগুলোর টাকা ফেরত দেওয়া হোক। বেকারদের সঙ্গে তামাশা বন্ধ করতে হবে।

ইমরান নামের চাকরিপ্রার্থীর শুক্রবার পাঁচটি পরীক্ষা পড়েছে। এর মধ্যে সকালে তিনটা এবং বিকেলে ২টা। তিনি বলেন, পাঁচটির মধ্যে মাত্র ২টার পরীক্ষার দিতে পারব। পরীক্ষায় বসার আগেই তিনটা বাদ দিতে হলে। এসব পদে আবেদন করতে গেছে দুই হাজার ৩০০ টাকা। টিউশনির কষ্টের টাকায় আবেদন করে পরীক্ষা দিতে না পারা আরও কষ্টের।

একই দিনে একাধিক পরীক্ষা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির গ্রুপগুলোতে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে অনেক চাকরিপ্রার্থীকে। কেউ কেউ দিনটিকে ‘দুঃখময়’ দিন হিসেবে অভিহিত করেছেন। চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এর আগে গত শুক্র ও শনিবারও একাধিক চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ খালেদ হোসেন বলেন, সব ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষা প্রতিটি সংস্থা আলাদা আলাদাভাবে করে। আমরাও সেভাবে করেছি। ওই দিনে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা আছে কি না আমাদের জানার কথা নয়। তবে একই দিনে একাধিক পরীক্ষার বিষয়টি আমাদের নজরে এলেও করার কিছু নেই। কারন একটি পরীক্ষা নিতে আমাদের অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়। এ থেকে সরে আসা সম্ভব নয়। তবে মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করলে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নেব।

জনপ্রসাশন বিশেষজ্ঞ ও পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যান  বলেন, এ ধরনে পরীক্ষা তরুণদের ওপর একটি প্রহসন। সমন্বয় করে এসব পরীক্ষা না নিলে অনেক তরুণ ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। কেননা তাঁরা পরীক্ষার ফি দিয়ে ও সময় নিয়ে এসব পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। তাদের উপর এভাবে একই দিনে এত পরীক্ষা চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়।

প্রথম আলো