শিবগঞ্জে যুবকের ২ হাতের কব্জি কাটার ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ আটক ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কাটার ঘটনায় মূল আসামী ফয়েজ চেয়ারম্যানসহ তার অপর এক সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌণে ৯ টার দিকে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হল।

আটককৃতরা হলেন, মূল আসামী উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফয়েজ উদ্দিন (৩৫), সহযোগী তারেক আহমদ (৩৫), জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও আলাউদ্দিন (৩৫)।

কব্জি হারানো রুবেল হোসেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে ভর্তি আছে। রুবেল শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা গ্রামের খোদা বক্সের ছেলে।

পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম) জানান, রাতে নওগাঁ পালিয়ে যাবার সময় সদর উপজেলার আমনুরায় পুলিশের চেক পোস্টে মূল আসামী উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজসহ তার অপর আরেক সহযোগীকে আটক করা হয়।

পুলিশ সুপার জানান, রুবেলের উপর হামলার পর থেকেই পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছিল আসামীদের ধরতে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান, পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম)।

দুই হাতের কব্জি হারানো রুবেল জানান, শিবগঞ্জের উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দিনের সাথে নদীর ঘাট নিয়ে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে দিয়েছে।

রুবেলের চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম বলেন, বুধবার রাতে রুবেল তার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি আসছিলেন। এ সময় শিবগঞ্জের উজিরপুর বেড়ি বাঁধের কাছে কয়েকজন তাদের পথ রোধ করেন এবং পাশেই চেয়ারম্যান ফয়েজের চেম্বারে গিয়ে দেখা করতে বলেন। রুবেল বন্ধুদের নিয়ে চেম্বারে গেলে, তার দুই বন্ধুকে সেখানে আটকে রাখা হয়। আর রুবেলের মুখ ও চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে পদ্মা নদীর বাঁধের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নির্যাতন করে তার দুই হাতের কব্জি কেটে নেন চেয়ারম্যানের লোকজন। রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আব্দুস সালাম আরো জানান, নিউ পদ্মা ফেরি ঘাট নিয়ে চেয়ারম্যান ফয়েজের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। এমপি ও তার ভাইয়ের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ মিলে মিশে ঘাটটি চালাচ্ছিল। কিন্তু কিছু দিন ধরে ফয়েজ ফেরি ঘাটটি পুরো নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছিলেন। এর জের ধরেই তার লোকজন রুবেলের দুই হাতের কব্জি কেটে নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন ফোন ধরেননি। তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন। গত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ফয়েজ উদ্দিন।

স/অ