শিবগঞ্জে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বহিষ্কার

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানিহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটি। বহিষ্কারের পর বিষয়টি গোপন থাকলেও শনিবার (১১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি প্রকাশ পায়। এর আগে ১১ জুন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালনা কমিটি সভাপতির সঙ্গে কথা বললে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ কর্মরত অন্য শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, স্কুলের ভবনের দোকানঘর অবৈধভাবে দখল করে ভাড়ার ৪ লাখ টাকা তহবিলে জমা না দেয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বিলম্বের লক্ষ্যে ১ লাখ টাকা ক্ষতিসাধন, দোকানঘর মেরামতের নামে ২ লাখ টাকা ও বিদ্যুৎ বিলের ১ লাখ টাকা আত্মসাতসহ মোট ১৮টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে কিছুদিন পূর্বে ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক তার বিপক্ষে অবস্থান নেন। পরে সভা করে ম্যানেজিং কমিটি জিজ্ঞাসা করলে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এরপর দুই দফায় প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি নোটিশ গ্রহণ না করে প্রেরক বরাবর ফেরত দেন। এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান  মুঠোফোনে জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন পূর্বেই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকেরা সভা করে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাকুরির শর্ত বিধিমালা ১৯৭৯ এর ২ (এ) ও ১৩ (১) ধারা মতে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কারের অনুলিপি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়। পাশাপাশি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাকুরির শর্ত বিধিমালা ১৯৮৯ এর ১৪ (২) ধারা অনুসারে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। অভিযোগগুলোর সত্যতা মিললে প্রধান শিক্ষকককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন  মুঠোফোনে দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ অপরদিকে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এনামুল হক জানান, সম্প্রতিকালে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে চালিয়ে আসছেন। বহিষ্কারের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সমন্বয়ে মিটিং হয়েছে। আশা করি অতিদ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

স/আ.মি