শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীর রাস্তায় শিক্ষার্থীদের প্রতীকী ক্লাস (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীতে প্রতীকী ক্লাস ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে রাস্তায় এ প্রতীকী ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।

এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ। এদিন ক্লাসের বিষয়বস্তু ছিল ‘সমসাময়িক বাংলাদেশ ও শিক্ষা পরিস্থিতি’।

এ নির্ধারিত বিষয়বস্তুর ওপর ক্লাস নেন রাবি অধ্যাপক। এরপর একজন শিক্ষার্থী দুই-এর ঘরের নামতা পড়েন ও শিশুকালে স্কুলের মতো উপস্থিত শিক্ষার্থীদেরও পড়ান। পরে মো. জাকারিয়া নামে একজন শিক্ষার্থী সেই নামতা রাবি অধ্যাপকের সামনে শোনান এবং দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার প্রতিবাদ হিসেবে ভুল করে পড়েন। দুই এক্ক তিন, দুই দুগনো পাঁচ, তিন দুগনো সাত, আট দুগনো সতের এভাবে ভুল পড়েন এবং শিক্ষার্থীরা হাত উঁচিয়ে প্রতীকী বাধা দেন।

জানা গেছে- একটানা ৪৩৭ দিন ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে। তবে লকডাউনের মধ্যেও শপিংমল, মার্কেট, অফিসসহ গণপরিবহণ চলাচল ও বন্ধ এমন অবস্থায় কেটেছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থেকে গেলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে শিক্ষার্থীরা সেশনজটসহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

এদিক বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে আসছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রাস্তায় বসে প্রতীকী ক্লাস করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জান্নাতুল সাবিরা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট রাজশাহীর সদস্য আবদুর রহমান নবীন, রাজশাহী নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ, রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী জাকারিয়া ইসলাম, নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ  শিক্ষার্থী নাদিম সিনা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ, সম্পাদক উত্তরণ সাহিত্য পত্রিকা রাজশাহী ও  রাবি শিক্ষার্থী মোহাব্বত হোসেন মিলন, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ-দৌলাসহ প্রমুখ।

এসময় তারা অবিলম্বে রাজশাহীসহ সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দেশের সবকিছু যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে সেখানে আমাদের কেনও বসিয়ে রাখা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। করোনা মহামারীর দোহাই দিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে জিম্মি করা হচ্ছে। সরকার পরিকল্পিত ভাবে এই প্রজন্মকে অসার ও মেরুদণ্ডহীন করে তুলছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান।

এদিকে, আজ বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১২টায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে ক্লাস নিতে পারব।

এর আগে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে আগামী ২৯ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। কিন্তু চলমান লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়ানো হলো।

স/অ