শিক্ষানীতিতে বড় পরিবর্তন ভারতে, গুরুত্ব হারাচ্ছে মাধ্যমিক

বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে ভারতের শিক্ষানীতিতে। প্রাক প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর- সব স্তরেই লাগছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, নতুন শিক্ষানীতিতে কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে যাবে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা।

পরিবর্তনেরও আওতায় আবারও শিক্ষামন্ত্রক ফেরাচ্ছে মোদি সরকার। থাকছে না মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক। ১৯৮৫ সালের পর ফিরছে শিক্ষামন্ত্রক। রাজীব গান্ধীর আমলে তৈরি হয়েছিল মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নামবদল চূড়ান্ত হয়েছে।

এরআগে ১৯৯২ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি সংশোধন করা হয়েছিল। প্রায় তিনদশক পরে দেশটির শিক্ষানীতি ফের সংশোধন করা হচ্ছে।

কী পরিবর্তন আসছে

নতুন শিক্ষানীতিতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষার অধিকার দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সকলকে নিজের ভাষায় পড়াশোনা করতে হবে। ইংরেজি মাধ্যমে নয়। তবে পঞ্চম শ্রেণির পর অবশ্য যে কোনো মাধ্যমেই পড়াশোনা করা যাবে। মাধ্যমিক স্তর থেকেই যেকোনো বিদেশি ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের উপর কোনো ভাষা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। তারা ইচ্ছে মতো যে কোনো ভাষায় শেখার অধিকার পাবে। তবে সংস্কৃত শিক্ষায় জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এতদিন ১০ বছরের মাধ্যমিক স্তর এবং ২ বছরের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের কাঠামোয় পড়াশোনা হতো। নতুন নিয়মে তা ভাঙা হয়েছে পাঁচ বছর, তিন বছর, তিন বছর এবং চার বছরের নিয়মে। এর মধ্যে ৩ বছরের প্রাক প্রাথমিক স্তর নিশ্চিত করা হয়েছে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নতুন নীতিতে। অর্থাৎ, মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষা আর দিতে হবে না। নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মধ্যে আটটি সেমেস্টারের কথা বলা হয়েছে। ওই সেমেস্টারের গড় নম্বর যোগ করেই দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল প্রকাশিত হবে।

এছাড়াও এর আগে দশম শ্রেণির পর ছাত্রছাত্রীরা কলা, বিজ্ঞান অথবা বাণিজ্য বিভাগে পড়াশোনার সুযোগ পেতেন। নতুন শিক্ষানীতিতে এই বিভাজন তুলে দেওয়া হচ্ছে। নবম শ্রেণির পরে ছাত্রছাত্রীরা যেকোনো বিষয় নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ, একই সঙ্গে রসায়ন এবং দর্শন পড়া যাবে। গণিত এবং ইতিহাস একই সঙ্গে পড়তে পারবে ছাত্রছাত্রীরা।

স্নাতক স্তরে আগে তিন বছর পড়াশোনা করতে হতো। নতুন নিয়মে স্নাতক স্তরে চার বছর পড়তে হবে ছাত্রছাত্রীদের। তবে স্নাতকোত্তর স্তরে দুই বছরের জায়গায় এক বছর পড়তে হবে।

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ