শিক্ষানগরী দেখার স্বপ্ন অঙ্গার!

শাহিনুল আশিক:


দীর্ঘদিনের স্বপ্ন নিমেশেই অঙ্গার হলো তাদের। রাজশাহী বিভাগের একটি জেলা শহর রংপুর ছিলো। তখন থেকেই স্বপ্নরা ডানা বেঁধেছে শিক্ষানগরী দেখার। বিভাগীয় হলেও বেশ বৈচিত্রে ভরা শহর এটি। তাই স্বপ্ন ছিলো রাজশাহী দেখার।



এনিয়ে বন্ধু সালাহউদ্দিন, ভুট্টু মিয়া ও ফুল মিয়ারা মিলে দিনক্ষণ ঠিক করে ২৬ মার্চ। যদিও এটি ছুটির দিন। তবে সালাহউদ্দিনেরা বন্ধ হলেও একেক জন একেক পেশার সঙ্গে জড়িত। কারও বিকাশের দোকান, কারো ওয়েলডিংয়ের দোকান রয়েছেন। নিজেদের পারিবারিক ভ্রমণে স্থান পায় পরিবারের সদস্যরাও।

শুধু তাই নয়- যাদের স্বজনরা কর্ম সূত্রে রাজশাহীতে আছেন তাদের সাথেও যোগাযোগ হয়েছে আগে থেকেই। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো পুরো শিক্ষানগরী ঘুরবো। এমন কথা, কথাই থেকে গেলো। শনিবার (২৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিহত  শামসুন্নাহার ও কামরুন্নাহারের ভাতিজি মোসা. চম্পা বেগম মরদেহ নিতে এসে সিল্কসিটিনিউজকে এভাবের বলছিলেন।

তিনি বলেন- ‘তাদের মধ্যে দুই-একজন ছাড়া কেউ কখনও রাজশাহীতে আসেনি। শিক্ষানগরী দেখার স্বাদ থেকে তারা শুক্রবার (২৬ মার্চ) ভোরে মাইক্রোবাস নিয়ে রওনা দেয়- পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে। পথে নাটোরে যাত্রা বিরতির পরে আবার রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হয় তারা।’

তিনি আরও বলেন- ‘রাজশাহী স্বপ্নের শহর ছিলো তাদের কাছে। দেখার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিলো তাদের। সেই শহরে ঢোকার আগেই মৃত্যু হলো তাদের।’

দেখা গেছে- নিহতদের মধ্যে সাজিদ (৮), ইয়ামিন (১৫), ফয়সাল (১৫) সুমাইয়া (৮) চারজন স্কুলে পড়ে। অনেকটাই তাদের সহ বাবা-মায়েরও দেখার স্বাদ ছিলো রাজশাহী দেখার। সেই থেকে মূলক এই যাত্রা।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালীতে হানিফ পরিবহন ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে অগ্নিকাণ্ডে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় ঘাতক বাসচালক আবদুুর রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এডিএম আবু আসলামকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ছাড়াও নিহতের স্বজনদের ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

কাটাখালী থানার সিসি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে- বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষের পরে বাসটি সড়কের দক্ষিণে নেমে যায়। আর মাইক্রোবাসটি সড়কের উপরে সামনের অংশে আগুন দেখা যায়। তার তিন থেকে পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে পেছন থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পরে পুরো মাইক্রোবাসে। এর আগে দুর্ঘটনার সময় মাইক্রোবাস থেকে শিশুসহ সাতজন ছিঁটকে পড়ে। আর মাইক্রোতে থাকা ১১ জনই পুড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।