শাবির ঘটনায় রাবি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি

রাবি প্রতিনিধি:
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ এবং শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সর্মথন জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওর্য়াক’।

মঙ্গলবার (২৫ জানুযারি) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। গত ২০ জানুয়ারি থেকে একই দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন রাবি শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হামলা নতুন কিছু নয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা হয়েছে। ২০০৩ সালে রোকেয়া হলের ছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা হয়েছিল। এখনো হামলা হচ্ছে তার প্রমাণ শাবিপ্রবির হামলা। কেন হামলা হল শাবিপ্রবিতে? তারা স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছে সেজন্য! একজন শিক্ষার্থীর যদি কিছু হয় তাহলে ছাত্র আন্দোলন কি হতে পারে বুঝতে পারছেন না। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী এবং একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারী ব্যক্তি উপাচার্য থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন। তার পদত্যাগ চাই।

একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, ছাত্র আন্দোলন গত ১০-২০ বছর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখছি। শাবিপ্রবিতে তারা প্রশাসনের সাথে সমঝোতা করতে চেয়েছিল। শিক্ষার্থীরা ১৪০ ঘন্টার বেশি সময় অনশন করছে কিন্তু সেদিকে নজর নেই সরকারের। পঁচা শামুকে পা কাটবেন না। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিন, পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করবেন না।

কর্মসূচিতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, নৈতিক দায়িত্ব থেকে আজ এই অবস্থান কর্মসূচিতে এসেছি। হলের প্রভোস্টের সাথে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ ছিল। তাদের আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের ছেলেরা তাদেরকে পেটালো। উপাচার্যের ইন্ধনে পুলিশও পেটাল । সরকার আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ খুঁজছে। তাহলে তৃতীয় পক্ষ কি পুলিশ, ছাত্রলীগ? তারা ছাত্রদের উপর আঘাত না করলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এখানে ষড়যন্ত্রের গন্ধ না খুঁজে শিক্ষার্থীদের বাঁচান। তারা জীবন বাজি রেখে অনশন করছে।

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌভিক রেজা বলেন , বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্র চর্চার জায়গা, অধ্যাদেশে ভিসি নির্বাচনের কথা বলা আছে। কিন্তু গত ত্রিশ বছর ধরে এই অধ্যাদেশ মতো ভিসি নিয়োগ চলে না। অনির্বাচিত ভিসি ও প্রশাসকের কাজ থাকে তাদের দল তৈরি করা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভিসি নির্বাচন চাই। শাবির ঘটনা এক দিনের বিস্ফোরণ নয়। ফুঁসে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। তাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ভিসি প্রয়োজন।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আবদুল মজিদ অন্তরের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মো. আলী রেজা, অধ্যাপক শাওন উদ্দীন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলনসহ প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

আ/ম