শহিদ জননী জাহানারা ইমামের স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মোমবাতি প্রজ্বলন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

শহিদ জননী জাহানারা ইমামের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। রবিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় উক্ত মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, বীর মুক্তিযোদ্ধা রহুল আমিন মজুমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্য অভিনেতা আহসানুল হক মিনু, সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ নুর আলম সরদার, কানিজ ফাতেমা, রাজ চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শের সম্রাট খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বারাতুল ইসলাম পরাগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার শাখার সভাপতি নাজিম উদ্দীনসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

শহিদ জননী জাহানারা ইমাম এর স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘শহিদ জননী জাহানারা ইমাম আমাদের সাহস ও অনুপ্রেরণা। আজ তার ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। শহিদ জননী জাহানারা ইমাম আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তার আন্দোলন ও সংগ্রামের কারণেই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি। তার অসামান্য অবদান কখনোই ভুলবে না বাংলাদেশ।’

ভাস্কর শিল্পী রাশা বলেন, শহিদ জননী জাহানারা ইমাম ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধীদের আতঙ্ক। ৭৫’ পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারের আন্দোলন তার অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শহিদ জননীর নেতৃত্বে আমরা রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। তার স্বামী এবং সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তিনি উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। শহিদ জননীর স্বপ্ন ও আদর্শ এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতা বিরোধী হেফাজত-জামায়াত অপশক্তিকে নির্মূল না করা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, শহিদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী প্রতিবছর জাতীয়ভাবে পালনের দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত শহিদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। রাষ্ট্র শহিদ জননী জাহানারা ইমামকে উপযুক্ত সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন প্রজন্মকে শহিদ জননীর প্রাথমিক থেকে উচ্চতর শিক্ষা পর্যন্ত সকল পাঠ্যক্রমে শহিদ জননীর জীবনী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা। শহিদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিরুদ্ধে শহিদ জননী গণ আদালত গঠন করে প্রতীকী বিচার শুরু করেছিলেন। তার আন্দোলনের কারণেই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারে শহিদ জননীর অসামান্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যতোদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততোদিন শহিদ জননী প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায় বেঁচে থাকবেন। শহিদ জননীর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা নতুন প্রজন্ম এগিয়ে যেতে চাই। স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানি অপশক্তিদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম চলমান থাকবে। বাংলাদেশে কোন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে রাজনীতি করতে দিবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়। জয় আমাদের হবেই। শহিদ জননী আমাদের জন্য সাহস ও অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন।

 

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন