শব্দ দূষণে মানসিক সমস্যায় বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অতিরিক্ত শব্দ দূষণের কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সম্প্রতি বাকৃবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুরাদ আহমেদ ফারুখ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা মিলে ওই গবেষণাটি করেন।

গবেষকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ ভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পাঠে মনোযোগহীনতা, মাথাব্যথা, শ্রবণশক্তির সমস্যা, উদ্বিগ্নতা, অনিদ্রা, স্নায়ুবিক সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে।

jagonews24

গবেষণার প্রধান মুরাদ আহমেদ ফারুখ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় প্রতিদিন প্রায় তিন হাজারের বেশি ভারী ও মাঝারি মানের যানবাহন চলাচল করে। এসব এলাকায় গবেষণায় শব্দ দূষণের মাত্রা নির্দেশক ম্যাপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে জিআইএস এবং আরএস প্রযুক্তি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শব্দ দূষণের মাত্রা নির্ণয়, দূষণের মাত্রা নির্দেশক ম্যাপ তৈরি ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের ওপর দূষণের প্রভাব ইত্যাদি বিষয়কে সামনে রেখে গবেষণা চালানো হয়েছে।

গবেষক আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব এলাকাকে ওই ম্যাপে উপস্থাপন করে লাল অঞ্চল ও হলুদ অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। লাল এলাকায় রয়েছে জব্বারের মোড়, কৃষি অনুষদ, প্রশাসনিক ভবন ও কেআর মার্কেট এলাকা। এসব এলাকায় শব্দের তীব্রতা ৮৫-৮৯ ডেসিবেল। ম্যাপের হলুদ এলাকার মধ্যে রয়েছে ভেটেরিনারি অনুষদ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ, পশুপালন অনুষদ, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও জয়নুল আবেদীন মিলনায়তন। এখানে শব্দের তীব্রতা ৮০-৮৪ ডেসিবেল। এসব এলাকার শব্দের তীব্রতা মানবদেহের সহনশীল মানের চেয়ে অনেক ওপরে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, গবেষণার তথ্যটি আমি জেনেছি। আসলেই এটি একটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়। যেসব কারণে এ দূষণগুলো হচ্ছে সেগুলো এই গবেষণার মাধ্যমে চিহ্নিত আছে। আমরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শব্দ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেবো।

পরিবেশ অধিদপ্তরের (ডিওই) তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ এলাকায় শব্দের তীব্রতা লেভেলের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মান ৪৫ ডেসিবেল। কিন্তু বাকৃবিতে কয়েকটি এলাকায় শব্দের এই তীব্রতা লেভেল ৮৫-৮৯ ডেসিবেল। যা সহ্যসীমার প্রায় দ্বিগুণ। এ কারণে এই এলাকায় বসবাসরতরা ভুগছে নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যায়। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষকদের পাঠদান কার্যক্রম। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৈনন্দিন কাজেও এর প্রভাব পড়ছে।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ