রবিবার , ১৪ জুলাই ২০২৪ | ৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীর মুক্তার শখ করে শিখেছেন কাচ খাওয়া!

Paris
জুলাই ১৪, ২০২৪ ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

কথায় আছে, শখের দাম লাখ টাকা। তবে কখনও কখনও অনেকে শখ পালন করতে গিয়ে আত্মঘাতীও হয়ে ওঠেন। তেমনই একজন রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার চকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মুক্তার হোসেন (৫৩)। পেশায় তিনি একজন রিকশাচালক।

সম্প্রতি কাচের বাল্ব খেয়ে আলোচনায় আসেন হতদরিদ্র এই রিকশাচালক। তবে তার এই কাচ খাওয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে মানসিক চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

রিকশাচালক মুক্তার হোসেন বলেন, ‘কাচ খাওয়া আমার শখ ও সাধনা। ৩০ বছর আগে ঢাকার মিরপুরের শাহ আলীর দরকারে আমার পীর মুর্শিদ ওয়াজ ভান্ডারীর কাছ থেকে কাচ খাওয়া শিখেছিলাম। আমার মুর্শিদ নিয়মিত কাচের বাল্ব খেতেন। এটার দেখার পর আমিও শিখতে চাই। সেখানে তিন বছর ধরে সাধনা করার পর আমি কাচের বাল্ব খাওয়া শিখেছি। এরপর নিয়মিতভাবে একনাগাড়ে ২৫ বছর ধরে কাচের বাল্ব খেয়েছি। গত ৫ বছর ধরে আর খাই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাচের বাল্ব খাওয়ার বিষয়টি আমি গোপন রেখেছি। এটা আমার গোপন সাধনা। কিন্তু এক বন্ধু এক বছর আগে বিষয়টি জেনে ফেলে। এরপর থেকে আমাকে বারবার বলছিল, তোমার কাচ খাওয়া দেখবো। এ কারণে তার সামনে কাচের বাল্ব খেয়েছি। সে ভিডিও করে ওইটা ফেসবুকে দিয়ে দিয়েছে। এ কারণে এলাকার মানুষ জেনে গেছে।’

মুক্তার হোসেন বলেন, ‘কাচের বাল্ব খেয়ে এখন পর্যন্ত আমার শারীরিক সমস্যা হয়নি। আমি অনেক সাধনার পর কাচ খাওয়ার কৌশল রপ্ত করেছি। এটা ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও শখের বসে এটা খাই। খেতেও ভালো লাগে। আমি সাধারণত নষ্ট হওয়া ৬০ থেকে ১০০ ওয়াটের বাল্বগুলো খাই। এর চেয়ে মোটা কাচ খেতে পারি না। কারণ, দাত দিয়ে এটা ভাঙা যায় না।’

মুক্তার হোসেন আরও জানান, তিনি পীরের মুরিদ। রাজশাহী নগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকার হজরত শাহ ওলি আহম্মেদের (রহ) মুরিদ তিনি। মাজার শরিফে নিয়মিত আসেন।

এদিকে, মুক্তার হোসেনের এই কাচ খাওয়া নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকেই এটির কঠোর সমালোচনা করে ‘হিরোইজম’ প্রদর্শন করে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা বলে আখ্যা দিচ্ছেন। তবে অনেকে তার এই সাধনাকে মূল্যায়নের দাবিও জানাচ্ছেন।

নগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকার রাশেদুজ্জামান রাইস বলেন, ‘এটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এতে তার শারীরিক সমস্যা হয় না বলেই জানাচ্ছেন। তেমনই যদি হয়ে থাকে, তাহলে তার সাধনাকে মূল্যায়ন করাও যেতে পারে।’

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, ‘কাচের বাল্ব কোনও খাদ্য নয়। এটা অখাদ্য। আর এটা খাওয়া যায় না। উনি গলাধঃকরণ করছেন। এটা আসলে মানসিক রোগ। রক্তশূন্যতা, অটিজমসহ নানা কারণে এ রোগ হয়। উনি হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে এটি খেয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। কিন্তু এটা তার মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ক্যানসারসহ নানা রোগ হতে পারে। সুতরাং এ মুহূর্তে তার চিকিৎসা প্রয়োজন।’

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর