লালপুরে প্রতিপক্ষের আঘাতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু

লালপুর প্রতিনিধি :
নাটোরের লালপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের আঘাতে আছিয়া বেগম (৬৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় নিহতের ছেলে মো. শাহিন আলম (৪৫) নামে একজন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ ২০২৩) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বড়বড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তাঁরা হলেন, ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাফাতুল্লাহর স্ত্রী নিহত আছিয়া বেগম ও ছেলে আহত মো. রায়হানুল ইসলাম।
স্থানীয় ও লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাফায়েতুল্লাহ ও বক্কারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। মঙ্গলবার সকালে সাফায়েত উল্লাহ ছেলে শাহিন আলম (৪৫) ও রায়হানুল ইসলাকে (৪২) নিয়ে মাঠে জমি চাষ করতে যান। এ সময় প্রতিপক্ষ ইয়ার উদ্দিনের ছেলে বক্কার ও মান্নান দলবল নিয়ে বাঁশের লাঠিসহ তাদের উপর আক্রমণ করে শাহিনুরকে গুরুতর আহত করেন। এ সময় শাহিনের মা ঠেকাতে গেলে ধাক্কায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে লালপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের ছেলে রায়হানুল ইসলাম বলেন, তাঁদের ক্রয়কৃত ৪৬ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। এখন ওই জমির মালিকানা দাবি করছে ইয়ার উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নান ও বাক্কার। এ নিয়ে একটি মামলার রায় পেয়েছেন। তারপরও বিবাদীরা ওই জমি দখলের চেষ্টা করায় অপর মামলা চলমান রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উভয় পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। এ সময় তার ভাই শাহিন আলমকে মারপিট করতে দেখে থামাতে গেলে বাঁশের লাঠির আঘাতে তার মা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যান।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জামিলা আক্তার বলেন, নিহতের ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বামী মৃত আইন উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাফাতুল্লাহ (৭৯) বলেন, গত ১৬ মার্চ তিনজন দিনমুজুর নিয়ে আবাদী ওই জমির ফসল (খেসাড়ী) কাটতে গেলে বড়বড়িয়া গ্রামের মৃত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে মো. বাক্কার আলী (৫৫), আব্দুল মান্নান (৪৫), আবুল হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল হান্নান (৪৫), মৃত আফসার আলীর ছেলে মো. আতাহার আলী (৫২) ও মো. মুন্নাফ আলী (৪৫) লাঠি-শোঠাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোর পূর্বক তাঁর জমির জমির ফসল (খেসাড়ী) কেটে নিয়ে চলে যান। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হাসুয়া নিয়ে মারমুখি হয়ে তেড়ে আসেন। এ ঘটনায় ওই দিন তিনি আব্দুলপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দায়ের করেন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ  করা হবে।