লালপুর প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুর উপজেলার নওশারা সুলতানপুর চর এলাকার মাঠ ফসলের অত্যাচারের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবারের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় এখন উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় রবিবার সকালে নওশারা সুলতানপুর চর এলাকা ঘুরে জানা যায়, এ পর্যন্ত কোন চাষীরা নিজের জমির ফসল চাষ করতে কেউ মাঠে নামেনি।

শনিবার সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয় ২০জন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ফতেপুর গ্রামের মৃত আবুল হেসেনের ছেলে আজবার আলী (৩৫), নওপাড়া গ্রামের মৃত ইজার উদ্দিনের ছেলে সাইফুল (৩৬) ও পানসিপাড়া গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে ফজলু মোল্লা (৪৩) মজের প্রামানিকের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (৭০), ওয়াহেদের ছেলে আহাদ আলী (৪২) ও ইনারুলের ছেলে সওদাগর (১৮) কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সংঘর্ষে আরো আহতরা হলেন, পানসিপাড়া গ্রামের আমির মোল্লার ছেলে শফিকুল (৪৫), ওয়াহেদ মন্ডলের ছেলে হাবিবুর রহমান টোনা (৪২), মৃত কানু মন্ডলের ছেলে ফজলু মন্ডল (৪৫), মৃত মোজাহার মন্ডলের ছেলে মুনছুর (৩৮), খলিল মন্ডলের ছেলে বছির মন্ডল (৫৫), আমিরুল ইসলামের ছেলে মনিরুজ্জামান (৩২), নওশারা সুলতানপুর চরের আমির কবিরাজের ছেলে হারান কবিরাজ (৩০), ওয়াহেদ আলীর ছেলে ইনারুল ইসলাম (৩৪), ইনারুল ইসলামের ছেলে সওদাগর (১৮), ইনারুলের ছেলে সাগর (১৫), রাইটা বাহাদুরপুর চরের আব্দুল আহত অবস্থায় লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন পানসিপাড়া গ্রামের মাহারুল ইসলামের ছেলে নুসারুল (৩০), মৃত ইজার প্রামানিকের ছেলে রাব্বি (৩৫), আজের মালিথার ছেলে আলতাফ মালিথা (৫০), ফতেপুর গ্রামের জানবক্সের ছেলে নিজাম (৪৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নওশারা সুলতানপুর গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে গরু-ছাগল ও মহিষের মাধ্যমে মাঠের ফসলের ক্ষতি করে আসছে। নিজ জমির ফসলের ক্ষতি করায় গত শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) পানসিপাড়া গ্রামের মৃত ছামসের মোল্লার ছেলে নিজাম উদ্দিন (৩৮) নওসারা সুলতানপুর চর এলাকার ইনারুলের সাথে কথাকাটির এক পর্যায়ে নিজামকে মারপিট করে ইনারুল ও তার ছেলে সওদাগর, সাগর ও চর এলাকার জিন্নাহ। নিজামকে গুরুতর অবস্থায় লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

গতকাল শনিবার সকালে পানসিপাড়া, ফতেপুর ও নওপাড়া এলাকার লোকজন চর এলাকায় নিজ নিজ জমিতে যান কাজের জন্য। এ সময় ইনারুলসহ অন্যান্যদের ফসলের ক্ষতি করতে নিষেধ করায় চরাঞ্চলের লোকজনের সঙ্গে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

এ ব্যাপারে নওশারা সুলতানপুর মাঠ কমিটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান পলাশ বলেন, চর এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মাঠ ফসলের ক্ষতি করে আসছে। স্থানীয়ভাবে ও প্রশাসনিক ভাবে সালিশ করেও এর কোন সুরাহা হচ্ছে না। ফসলের ক্ষতিকারীরাই পরিকল্পিতভাবে জমির মালিক, পাহারাদার ও শ্রমিকদের উপর ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে। এ ঘটনায় লালপুর থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।

লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও আব্দুর রাজ্জাক জানান, ইতোমধ্যে এ ঘটনায় ৩ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। নিজামসহ ১৩ জন এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৩-৪ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হতে পারে।

এ ব্যাপারে লালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু ওবায়েদ জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। এখনো কেউ অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

স/অ