লালপুরে তালশাঁস বিক্রি করে সুখি মেজর আলী

লালপুর প্রতিনিধি:

ভেজালের আশঙ্কা না থাকায় মানুষ কচি তালের শাঁস (তাল কুর) খুবই পছন্দ করেন। প্রচন্ড গরমে এ তালশাঁস মানুষের তৃষ্ণা মিটায়। খেতে নরম ও সুস্বাদু হওয়ায় মানুষের এ ফলের প্রতি আগ্রহ যথেষ্ট। ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকায় সব শ্রেণীর মানুষকেই তীব্র উৎসাহ নিয়ে তালশাঁস খেতে দেখা যায়।

নাটোরের লালপুরের চংধুপইল ইউনিয়নের বাওড়া গ্রামের বিচ্ছাদ আলীর ছেলে মেজর আলী (৩৭) প্রায় ১৬ বছর ধরে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। সোমবার (৩০ মে)উপজেলার সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয় এর সামনে তালশাঁস বিক্রি করেন মেজর আলী। তিনি বলেন, একটা তালের মধ্যে দুই থেকে তিনটা শাস থাকে। গড়ে ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। চুক্তিতে ৫০০থেকে ৬০০টাকায় একটি গাছের তাল কেনেন। গাছ থেকে পেড়ে আনা, বহন করা কাটাকুটিসহ সব শ্রমই নিজে করেন। বাজারে এনে এসব তাল থেকে শাস বিক্রি করেন।

মেজর আলী বলেন, দিনে ২০০থেকে ২৫০ টি তালের শাঁস বিক্রি হয়। প্রতিদিন আয় হয় ৭০০থেকে ৮০০টাকা। একমাত্র মেয়ে যুথিকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে জীবন (৭) ব্র‍্যাক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। মহামারি করোনা এই দুর্যোগ সময়ে তালশাঁস বিক্রি করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সংসারে সুখে শান্তিতে রয়েছেন। তাল ফুরিয়ে গেলে তখন অন্য পেশাই চলে যান।

লালপুর হাসপাতাল চত্তরে তালশাঁস বিক্রেতা রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৬৫) বলেন, বছরের অন্যান্য সময় দিনমজুরের কাজ করলেও এখন তালের সাষ বিক্রি করছেন। তিনি বলেন দাম গত বছরের চেয়ে বেশি। এবারে তালের সংকট থাকায় দাম বেড়েছে। প্রতিটি শাস এখন ৫ টাকা দরে একটি তাল ১৫ টাকায় বিক্রি করছেন।

তালশাঁস ক্রেতা জিল্লুর রহমান বলেন, এই গরমে তালশাঁস খেতে খুবই মজা। ৮টি তাল ৮০ টাকায় কিনে ২২টি তালশাঁস পেয়েছেন। পরিবারের ছোট বাচ্চারাও এটা খুবই পছন্দ করে। তালশাঁস কিনতে আসা শামিম আহমেদ জানান, গত বছরের চেয়ে এবার তালশাঁসের দাম একটু বেশি। গত বছর যে তালের সাষ ৩ থেকে ৪ টাকায় কিনেছেন এবার সেটা ৫ থেকে ৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

শামসুন্নাহার বেগম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জীবন। একটু স্বস্তি পেতে তালশাঁস কিনেছেন।

কচুয়া গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে পাচটি তাল গাছ আছে। কচি তাল প্রতিটি ৭ টাকা হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও মোড়ে ২০/২২ জন তালশাঁস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন দুপুরে গরম পড়লে সাষ বিক্রি বেশি হয়।

জি/আর