লটারি জিতে বিনা খরচে মহাকাশে যাচ্ছেন মা-মেয়ে

ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসনের কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাকটিক একটি লটারির আয়োজন করেছিল। লটারি বিজয়ীদের বিনামূল্যে মহাকাশে পাঠাবে তারা। প্রথম বারের মতো ওই প্রতিষ্ঠান মহাকাশে পর্যটক পাঠাবে বলে জানিয়েছে। এন্টিগুয়া ও বারমুডার এক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শক ওই লটারিতে মহাকাশে যাওয়ার দুইটি টিকিট জিতেছেন। এর মূল্য প্রায় ১০ লাখ ডলার। যিনি টিকিট জিতেছেন তিনি তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দেবেন বলে জানা গেছে।

৪৫ বছর বয়সী কেইশা শাহাফ তার ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে মহাকাশ পাড়ি দিতে চাচ্ছেন। তার মেয়ে বিজ্ঞানের ছাত্রী। পড়াশোনা করছেন যুক্তরাজ্যে। তার স্বপ্ন ছিল একসময় সে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায় কাজ করবে।

টিকিট জয়ের খবরটি ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্র্যানসনের কাছ থেকে পান কেইশা। নভেম্বরের শুরুতে কেইশার বাড়িতে গিয়ে চমকে দেন তিনি। কেইশা বলেন, আমার মনে হচ্ছিল জুমে আমি তার সঙ্গে কথা বলছি। ব্র্যানসনকে দেখে আমি কান্না করতে শুরু করি। কারণ আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ছোটবেলা থেকেই আমি মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী ছিলাম। এটা আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ।

ওমাজ প্ল্যাটফর্ম নামে মার্কিন কোম্পানির মাধ্যমে ভার্জিন গ্যালাকটিক কর্তৃক আয়োজিত একটি তহবিল সংগ্রহকারী লটারিতে নাম লেখানোর পর পুরস্কার জিতেছেন তিনি। আয়োজনের মাধ্যমে ১৭ লাখ ডলার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। মানবতার জন্য মহাকাশ এমন একটি বেসরকারি সংগঠনকে এ অর্থ দেওয়া হবে। তবে কত ডলার দিয়ে কেইশা লটারি কিনেছিলেন এখনো সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে এতে সর্বনিম্ন ১০ ডলার দিতে হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভার্জিন গ্যালাকটিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লটারিতে এক লাখ ৬৫ হাজার মানুষ অংশ নেয়। মহাকাশে ভ্রমণের পথ উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে ভার্জিন গ্যালাকটিক। ফলে বহু মানুষ মহাকাশে ভ্রমণের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে মহাকাশ পর্যটন নিয়ে। যদিও মহাকাশে ভ্রমণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

ব্র্যানসন জানান, সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে মহাকাশে ভ্রমণের সুযোগ করে দিতেই গত দুই দশক ধরে তার কোম্পানি কাজ করছে। এর আগে জুলাইতে ব্লু ওরিজেনের মালিক জেফ বেজোসকে টেক্কা দিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে মহাকাশ ভ্রমণে যান ব্র্যানসন।

কোম্পানির এক মুখপাত্র জানান, যারা প্রথম বারের মতো মহাকাশ ভ্রমণে যাবেন তাদের মধ্যে কেইশা একজন। তবে তিনি কোন লাইনে সুযোগ পাবেন তা এখনো বলা যাচ্ছে না। কারণ এরই মধ্যে কোম্পনি ৭শ টিকিট বিক্রি করেছে। ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬শ টিকিট বিক্রি হয়েছে। তখন প্রতিটি টিকিটের মূল্য পড়েছে আড়াই লাখ ডলার। বাকি একশ টিকিট বিক্রি হয়েছে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে। প্রতিটি টিকিটের মূল্য পড়েছে সাড়ে চার লাখ ডলার।

বাণিজ্যিকভাবে ফ্লাইট শুরুর আগে কোম্পানি এক হাজার টিকিট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ২০২২ সালের শেষের দিকে প্রথম ফ্লাইট যাত্রা করতে পারে।

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ