শনিবার , ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রোজা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা: এবার ২০ গুণ বেশি পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি

Paris
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০ ৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রমজান এলেই সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি যেন স্বাভাবিক প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারও সেই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই রমজাননির্ভর ছয় পণ্য- ছোলা, ভোজ্যতেল, মসুরের ডাল, চিনি, পেঁয়াজ ও খেজুরের দাম বাড়াতে শুরু করেছে সিন্ডিকেট।

তাই সিন্ডিকেট ভাঙতে ও নিত্যপণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রণালয় বলছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর খোলা বাজারে ভর্তুকি মূল্যে সর্বোচ্চ ২০ গুণ বেশি রমজাননির্ভর এ ছয় পণ্য বিক্রি করবে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রতি বছর টিসিবি সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় এ বছর রমজানকে কেন্দ্র করে টিসিবির বিক্রির তালিকায় পেঁয়াজ যুক্ত করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, গত বছর টিসিবি দুই থেকে আড়াই হাজার টন সয়াবিন তেল বিক্রি করলেও এবার ৫০ হাজার টন তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার ২০ গুণ বেশি সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে।

একইভাবে এ বছর ৩০ হাজার টন চিনি ক্রয় করে খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে। গত বছর টিসিবি চিনি বিক্রি করেছিল মাত্র দুই হাজার টন। এক্ষেত্রে দেখা যায় এ বছর ১৫ গুণ বেশি চিনি বিক্রি করা হবে।

এ বছর ৮ হাজার টন ছোলা বিক্রি করবে টিসিবি। গত বছর রমজানে ১৫শ’ টন ছোলা বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছিল টিসিবি। সেক্ষেত্রে এবার ৫ দশমিক ৩৩ গুণ বেশি ছোলা বিক্রি করা হবে। গত বছরের চেয়ে এক হাজার টন থেকে বাড়িয়ে এবার ৩ হাজার টন মসুর ডাল ও ৫০০ টন খেজুর টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।

কর্মপরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের দাম চড়া থাকলেও রমজানের আগেই পুরো দমে দেশি পেঁয়াজ বাজারে পাওয়া যাবে। এছাড়া এর আগেই বিভিন্ন বেসরকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেড় লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুরোধ করা হয়েছে। যা ইতিমধ্যে দেশে পৌঁছতে পাইপলাইনে আছে। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম রমজানে যাতে সহনীয় থাকে এজন্য বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে টিসিবির মাধ্যমে ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ি বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ৩০ হাজার টন সয়াবিন তেল ও ২৫ হাজার টন চিনি কিনতে অনুমোদন দিয়েছে।

সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিস লাগে যে কোনো উপায়ে তার সরবরাহ ঠিক রাখা হবে। এক্ষেত্রে মূল সাপ্লাই চেইন হিসেবে টিসিবিকে আমরা ব্যবহার করব। টিসিবির মাধ্যমে জিনিস প্রকিউর করব এবং ডিস্ট্রিবিউট করব।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকতা  বলেন, এবার রমজানে টিসিবির মাধ্যমে খোলা বাজারে শুধু বেশি পরিমাণে পণ্য বিক্রি করা হবে তাই নয়, বাজার মনিটরিংও করা হবে শক্তভাবে। যাতে কেউ রোজাকেন্দ্রিক বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রমজানের বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে ইতিমধ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে। যা ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ বিভিন্ন অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যাতে সবাই আগেভাগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে।

এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেই কর্মপরিকল্পনা টিসিবিকে দেয়া হয়েছে। সেভাবে আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, এবার গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে রমজাননির্ভর পণ্য ভর্তুকি মূল্যে খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে। যাতে করে অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজানে নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি করতে না পারে।

জানতে চাইলে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, রমজান এলেই অতি মুনাফালোভীরা পণ্যের দাম বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়ে; যা একেবারে ঠিক না।

তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবি এবার জোরালো ভূমিকা রাখছে। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে রমজানে ভোক্তাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। তবে টিসিবির পণ্য কালোবাজারে বিক্রি হয়ে গেলে, ভোক্তারা সুফল থেকে বঞ্চিত হবেন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল বলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অধিদফতর ইতিমধ্যে বাজার মনিটরিং শুরু করেছে। এখন থেকেই কোনো অনিয়ম নজরে এলে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এছাড়া রমজানে কেউ যদি অযৌক্তিক ভাবে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে ভোক্তাদের ঠকাতে চেষ্টা করে, তবে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। প্রয়োজন হলে জরিমানার সঙ্গে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হবে। এবার কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।

সর্বশেষ - জাতীয়