শুক্রবার , ২২ জুলাই ২০১৬ | ২৪শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

‘রুমা জঙ্গি নয় মানসিক ভারসাম্যহীন’

Paris
জুলাই ২২, ২০১৬ ৯:২১ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রুমা আক্তার (৩২) নামে এক নারীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গত বুধবার গভীর রাতে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের চরখুপি গ্রাম থেকে রুমাকে আটক করা হয়। তবে রুমার স্বজনরা জানিয়েছেন, রুমা জঙ্গি নয়, মানসিক ভারসাম্যহীন।

 

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১ জুলাই জঙ্গি হামলার সময় গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজানের সামনে থেকে সিসিটিভিতে ধারণ করা ভিডিওতে যে নারীকে দেখা যায়, তিনিই রুমা।

 

গত বুধবার গভীর রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের চরখুপি গ্রামে তাঁর বোন সাবিনা আক্তারের বাড়ি থেকে রুমাকে আটক করে। রুমা একই জেলার পলাশ উপজেলার চরসিন্ধুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা। রুমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর নাম শাহাবুদ্দিন বুদু মিয়া।

 

চরখুপি গ্রামে গিয়ে জানা যায়, রুমা আক্তার ঢাকায় বাড্ডা বা নতুন বাজার এলাকায় থাকতেন। স্বজনসহ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ দাবি করেন, রুমার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। নয় বছর আগে রুমার স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এর পর থেকেই রুমা আর স্বাভাবিক নেই। রুমার এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল। শ্রাবণ খান নামে একটি ছেলে আছে রুমার। শ্রাবণ তার বাবার কাছে থাকে।

 

স্বজনরা জানান, ঢাকায় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করেন রুমা। তবে নিয়মিত না। ইচ্ছে না হলে বেরিয়ে যান। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর গৃহপরিচারিকার কাজ নিয়ে দুবাই যান। তবে তিন মাস পর ফিরে আসেন।

 

‘আমার বোন মানসিক প্রতিবন্ধী’

রুমার বোন সাবিনা আক্তার জানালেন, রুমা একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। নয় বছর আগে রুমার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। কিন্তু পরে জানা যায়, ওই স্বামীর আরেকটি স্ত্রী আছে। ওই স্ত্রী পরে এসে রুমার স্বামীকে নিয়ে যায়। সংসারের ওই ভাঙনের পর থেকেই রুমা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন।

 

ঘটনার দিন হোটেল আর্টিজানের সামনে রুমার চলে আসার ব্যাপারে সাবিনা বলেন, ‘ওই দিকে ছিল। ও ওই দিকে ঘুরাফেরা করে। অমুক-তমুকের কাছে ১০ টাকা নেয়। ওর কিছু বখাটে বন্ধুবান্ধবও আছে। কিন্তু ও একদম রাস্তার পাগলের মতো। কুড়িয়ে খাবারও খায়। আমাদের মাঝে মাঝে ফোন দেয়, বলে আমি অমুক এলাকায়, মোবাইলে টাকা লাগবে, আমাকে একটু খাবার লাগবে।’

 

সাবিনা বলেন, ‘এটা তো আবাসিক এলাকা। ভিআইপিদের এলাকা। প্রায় সব বাড়িতে সিসিটিভি আছে। আমার ধারণা, ওই ক্যামেরায় আংশিকভাবে রুমাকে দেখা যায়। এমনও হতে পারে ওই এলাকায় দাঁড়িয়ে অন্যদের সঙ্গে ফোনে বলছিল। ঘটনা এটাই।’

 

সাবিনা বলেন, ‘ওই দিন ঘটনার পর আমি রুমাকে ফোন দেই। আমি শুনেছি রুমা নতুন বাজার বা বাড্ডায় থাকে। ফোনে বললাম গুলশানে ঝামেলা হচ্ছে, ওদিকে যাইস না। রুমা আমাকে বলে, আপা আমি তো ওখানেই ছিলাম। যে জায়গায় ঘটনা হয়েছে, ওইদিকে কিছুক্ষণ আগে বসে চা খেয়েছি। চা শেষ করে যাওয়ার সময় বুঝতে পারি, ব্যাপারটা অনেক বড়। তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম। ও এ রকম একটা মানুষ রাত-বিরাতে বের হয়ে যায়। নিজের প্রতি কোনো যত্নই নেয় না।’

 

সাবিনা জানান, গত নয় বছর ধরে তাঁর এ অবস্থা। একবার কেরোসিন তেল ঢেলে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

 

সাবিনা বলেন, ‘বোনটা ওদিকে ঘুরাঘুরি করছিল। তাই ধরা পড়েছে ফুটেজ ক্যামেরায়। এর ওপর ভিত্তি করে সবাই ওকে ধরছে। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আমার বোনটা মুক্তি পাক, এটাই চাই।’

 

রুমার বাবা শাহাবুদ্দিন বুদু মিয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘তদন্ত হোক। যদি জড়িত থাকে, তবে তার শাস্তি  হোক।’

 

গ্রামের বাসিন্দারাও দাবি করেন, রুমার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। একাধিক বাসিন্দা বলেন, মেয়েটা ভালো। কেবল মাথায় একটু সমস্যা আছে। এই ভালো, আবার এই খারাপ ব্যবহার করা শুরু করে। মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল বলেই রুমা ওই ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিল।

 

গত ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। এ ছাড়া জঙ্গিদের গ্রেনেডে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হন পাঁচ হামলাকারী ও রেস্তোরাঁর এক কর্মী।

 

গুলশানে ওই রেস্তোরাঁয় হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন চার ব্যক্তির ছবি গত ১৯ জুলাই প্রকাশ করে র‍্যাব। ঘটনার দিন হলি আর্টিজানের আশপাশের এলাকায় স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে চারজনের ছবি প্রকাশ করা হয়।

সূত্র: এনটিভি

সর্বশেষ - জাতীয়