বৃহস্পতিবার , ২৬ আগস্ট ২০২১ | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহী হাসপাতালে করোনা রোগী নেমে এসেছে অর্ধেকে, কমছে মৃত্যু

Paris
আগস্ট ২৬, ২০২১ ১২:৫১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রায় তিন মাস পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে সর্বনিম্ন মৃত্যুর সংখ্যা নেমে এসেছে সাত জনে। চলতি বছরের ১ জুন একদিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সাতজনের মৃত্যু হয়েছিলো। এর পর থেকেই হু হু করে বাড়তে থাকে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা। যা চলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তবে আশার কথা হলো এখন প্রায় প্রতিদিনই করোনা রোগীর মৃত্যুর হার কমছে রামেক হাসপাতালে। ফলে প্রায় তিন মাস পরে এসে গত বুধবার সকাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পযর্যন্ত এ হাসপাতালে ২৪ ঘন্টায় মারা গেছে ৬ জন। পাশাপাসি এক মাসেরও বেশি সময় পরে এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকের কম। আজ সকাল পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি আছেন ১৯০ জন। যা গত ১৭ জুন ছিল ৫২৭ জন।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র মতে, চলতি বছরের জুন থেকে রামেক হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ও আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। ফলে রামেক হাসপাতাল যেন একটি মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়। এ মৃত্যুর মিছিল কখনো একটু কমে তো আবার হু হু করে বেড়ে যায়। ফলে হাসপাতালের প্রধান ফটক প্রতিদিন স্বজন হারানোদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে। তবে চলতি আগস্ট মাসের শুরু থেকেই রোগীর সংখ্যা কমতে থাকে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করে আগস্টের মাঝামাঝি এসে।

গত ১৭ জুলাই রামেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ৪৫৪টি শয্যার বিপরীতে রোগীর সংখ্যা ছিল ৫২৭ জন। পরবর্তিতে শয্যা সংখ্যা ৫১৩টি বৃদ্ধি করার পর থেকে রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। তবে প্রতিদিন মৃত্যু হার গড়ে ১৭ জন করে ছিলো জুলাই মাসে। গতকাল এ হাসপাতালে ৪১৮টি শয্যার বিপরীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে ও আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি ছিল ২০৯ জন। সেই হিসেবে বলা যায় এক মাস সাত দিন পরে এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগী নেমে এসেছে অর্ধেকে।

কিন্তু মত্যুর মিছিল যেন কিছুতেই থামছে না। চলতি মাসেও প্রতিদিন গড় মৃত্যুর গিয়ে দাঁড়িয়েছে কাটায় কাটায় ১৬ জন করে। যা গত জুলাই মাসে ছিলো ১৬ দশমিক ৯৭ জন করে। আগের জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৩ জন করে মারা গেছেন। তবে গতকাল ২৫ আগস্ট পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন মারা গেছে ১২ দশমিক ৫২ জন করে।

রামেক হাসপাতাল সূত্র মতে, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গত বছরের এপ্রিলমাস থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়। এর পর ওই বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান ১৫৩ জন রোগী। এর পর আগস্টে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগী মারা যান এ হাসপাতালে। গত বছরের আগস্টে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৯৭ জন। এর পর সেপ্টেম্বরে ৫০ জন, অক্টোবরে ২৮ জন, নভেম্বরে ৩১ জন, ডিসেম্বরে ৩৪ জন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২৯ জন, ফেব্রয়ারিতে ১৭ জন, মার্চে ৩১ জন, এপ্রিলে ৭৯ জন, মে’তে ১২৪ জন, জুনে ৪০৫ জন, জুলাই মাসে রেকর্ড ৫২৩ জন মারা যান। সর্বশেষ চলতি আগস্টের ১০ দিনে মারা গেছেন ১৬০ জন এবং গতকাল পর্যন্ত ১৫ দিনে মারা গেছে ১৫৩ জন। সেই হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা গত জুলাইয়ের চেয়ে আগস্টে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগস্টে গতকাল পর্যন্ত মারা গেছে মোট ৩১৩ জন।

রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার জানান, হাসপাতালে রোগী কমে গেছে। পাশাপাশি কমেছে মৃত্যু হারও। করোনার দুই ডোজ টিকা অনেকের দেওয়ার ফলে মৃত্যুর হার কমতে শুরু করেছে বলেই তিনি মনে করেন। এর পাশাপাশি টানা লকডাউনের সফলতা এসেথে রাজশাহীতে। গত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই মূলত দফায় দফায় রাজশাহীতে লকডাউন চলছিল।

রাজশাহী সিভিল সার্জন দপ্তর থেকে পাঠানো করোনা চিত্রে দেখা যায়, গতকাল রাজশাহীতে করো আক্রান্তের হার নেমে এসেছে ১৩ দশমিক ৪২ ভাগে। যা গত ২৫ জুন ছিল প্রায় ৩৮ ভাগ।

রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এস্ট্রোজনেকার প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৭৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ১৭৯ জন। সিনোফার্মার প্রথম ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ৬৬৫ জন। মর্ডানার প্রথম ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮৪৭ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ২৫২ জন।

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর