রাবি ভর্তি পরীক্ষা, সীট খালি নেই শহরের হোটেলে

 

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯, ৩০ ও ৩১ মে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তিন হাজার ৯৩০ আসনের বিপরীতে এবার তিন ইউনিট মিলিয়ে কোটাসহ চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে এক লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪টি। এরমধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৭২ হাজার ৫০টি, ‘বি’ ইউনিটে ৩০ হাজার ৬৭৪টি এবং ‘সি’ ইউনিটে চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে ৭৫ হাজার ৮৫০টি। এ হিসেব অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনে লড়াই করবে ৪৫ জন ভর্তিচ্ছু।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ায় দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই পরীক্ষা দিতে হয়। কিন্তু
এরমধ্যে এখনকার আবাসিক হোটেলগুলোতে মিলছে না সিট। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভর্তিচ্ছুদের অভিভাবকরা। পরিচিত জনদের জন্য সীট খুঁজতে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে ক্যাম্পাসের অনেককেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ আমার বাসা সাতক্ষীরা জেলায়। এতদূর থেকে সরাসরি এসে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না। তাই এলাকার অনেকেই থাকার ব্যবস্থা করতে বলায় আমি গত ৮ ১০ দিন আগে শহরের বেশ কয়েকটা হোটেলে ঘুরে সীট পাই নি। যা-ও বা আছে তা আমাদের সাধ্যের বাইরে।” এসময় ওই শিক্ষার্থী আরও জানায় সীট না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাদের ক্যাম্পাসেই রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির তথ্যমতে, রাজশাহী নগরীতে ছোট-বড় মিলে ৬৫ টি আবাসিক হোটেল আছে। এসব হোটেলে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার লোক থাকতে পারবেন। তবে এরই মধ্যে এসব হোটেল বুকিং শেষ হয়েছে। ফলে অনেক অভিভাবক ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা এখন হোটেলে সিট খুঁজতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
রাবিতে ভর্তিচ্ছুদের বিষয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমানের পাঠানো এক বিজ্ঞাপ্তীতে সাতটি নির্দেশনার কথা জানান। নির্দেশনাগুলো হলো,
১. মেসে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একজন পরীক্ষার্থীকে একদম ফ্রি রাখতে পারবে একাধিক পরীক্ষার্থী হলে সে ক্ষেত্রে মেস মালিকের সাথে অবশ্যই কথা বলে নিতে হবে। তবে পরীক্ষার্থীদের সাথে অবিভাবক বা অন্য কেউ আসলে মেসের কোয়ালিটি অনুযায়ী ২০০–৫০০ টাকার মধ্যে দিন প্রতি চার্জ দিতে হবে।
২. ভর্তি পরীক্ষার্থীকে মেসে ওঠার সময় মেস মালিককে অবশ্যই তার পরিচয় পত্র বা অ্যাডমিট কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
৩. রাতে অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাথে নিয়ে আসতে হবে।
৪. মেসের রুম, টয়লেট, ডাইনিং, বেলকোনি ব্যবহারের পর নোংরা যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৫. মেস মালিকগণ রাজশাহীর সমস্ত যানবাহন অর্থাৎ রিক্সা, অটো, সিএনজিগুলোকে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার অনুরোধ করেছে।
৬. আর কোনো মেস মালিক বাজে আচরণ করলে আমাদের দেওয়া নম্বরে অথবা স্থানীয় থানায় অভিযোগ করবেন।
৭. সার্বিক সহযোগিতার জন্য ক্যাম্পাসে মেস মালিকদের পক্ষ থেকে একটি বুথ থাকবে সেখানে শিক্ষার্থীদের তথ্য, মাস্ক, কলমসহ ভর্তি পরীক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফ্রীতে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় আসা বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের থাকার মতো আবাসিক সুবিধা রাজশাহী নগরীতে নেই। এ কারণে ভর্তি পরীক্ষার সময় আবাসিক হলগুলো খোলা থাকবে। পরীক্ষার্থী ও অবিভাবকদের হয়রানি বন্ধে আমরা হোটেল ও মেস মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করেছি।’