রাবির মাদারবখশ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে মারলেন সহ-সভাপতি!

রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মোটরসাইকেলে বসাকে কেন্দ্র করে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই হলের সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে। আজ বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের ফটকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাদার বখশ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান রাথিকের মোটরসাইকেলে হাত রাখে একই হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী ইজাজুল ইসলাম মুন্না। এসময় রাথিক মুন্নাকে বলে ‘ক্যাম্পাসে এতো সাইকেল-বাইক চুরির ঘটনা ঘটছে, তুই কি আমার বাইক চুরি করার চিন্তা করছিস নাকি?’। এতে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

একইদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ৭-৮জন ছাত্রলীগ কর্মীসহ হলের ফটকে দাড়িয়ে ছিল মুন্না। তখন রাথিক সেখানে আসলে মুন্না সকালের আচরণের কৈফিয়ত চায়। তখন সেখানে থাকা দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে সেখানে থাকা রাথিকের বাইক পড়ে যায়। তখন রাথিক মুন্নাকে মারতে তেড়ে আসলে মুন্নার সাথে থাকা আরও ৭-৮ জন কর্মী মিলে রাথিককে মারধর করেন।

বিষয়টি তাৎক্ষণিক রাথিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুকে ফোন করে জানান। এরপর সেখানে উপস্থিত হন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু ও বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েম জেমসহ বিভিন্ন হলের নেতাকর্মী। তারা আসাদুল্লা-হিল-গালিবের কক্ষের সামনে মুন্নাকে আটক করে মারধর করেন।

মারধরের বিষয়ে মাদার বখশ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইজাজুল ইসলাম মুন্নাকে ফোন করা হলে তিনি মারধরের বিষয়টি অস্বীকৃতি জানান এবং কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে মাদার বখশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান রাথিক বলেন, ‘সামান্য একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে একটু কথা-কাটাকাটি হয়েছে। মারামারির কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি। পরে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুনু ভাই বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।

বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘আমার কয়েকজন ছেলের সঙ্গে রাথিকের একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে রুনু ভাই বলেন বিষয়টি মিমাংসা করা দরকার। পরে সবাইকে নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমাদেরই কর্মীদের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে একটু কথা-কাটাকাটি হয়েছে। এতে উত্তেজনাবশত একটু হাতাহাতিও হতে পারে। পরে দুপক্ষকে ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ শামীম হোসেন বলেন, ‘আমি ওইসময় হলেই ছিলাম। আমি উপস্থিত হলে দুইপক্ষ সরে যায়। তবে এঘটনায় আমাকে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘ঘটনা জানতে পেরে আমাদের কয়েকজন সহকারী প্রক্টর সেখানে যায়। কিন্তু যাওয়ার পর তারা জানতে পারে বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে।’