শুক্রবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাবিতে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে আতঙ্কগ্রহস্থ হলেন হাজারো যুবক-যুবতী

Paris
ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬ ২:১৫ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিনিধি:
নিয়োগে বয়সসীমা বাতিল ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফের নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

 

তবে এ পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্চিত হয়ে আতঙ্ক মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো হাজারো বেকার যুবক-যুবতীকে। যারা তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল সকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে হাজির হয়েছিলেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বিজ্ঞান ভবনে ক্যাটালগার ক্যাটাগরিতে ৩টি পদের বিপরীতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরুও হয়েছিল। কিন্তু পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেন। এরপর তারা কেন্দ্রের গেটগুলেতে তালা ঝুলিয়ে দেন। অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গেটে অবস্থান নিয়ে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেয়। এসময় তাদের পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছেন।

 

বিভিন্ন সূত্র সিল্কসিটি নিউজকে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ক্যাটাগরিতে ২৭টি পদের বিপরীতে গত ২৩ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিনজন ক্যাটালগার পদে, ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২০ জন ড্যাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ৪ জন গ্রন্থাগার সহকারী পদের পরীক্ষা হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল। তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ২৭টি পদের বিপরীতে আবেদন করেন ৩ হাজার ২২০ জন পরীক্ষার্থী। এতে প্রার্থীদের বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩০ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য সর্বোচ্চ ৩২ বছর নির্ধারিত ছিল। এই বয়সসীমা উঠিয়ে দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান নেতাকর্মীরা। তিনটি পরীক্ষা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলেও ঘোষণা দেন নেতারা।

 

এদিকে, পরীক্ষা দিতে না পারায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। পরীক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। এসময় তারা চরম আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন। শেষে পরীক্ষা সম্পন্ন না করেই বাড়ি চলে যেতে হয় তােদের।

 

রংপুর থেকে পরীক্ষা দিতে আসা সুমনা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘সাড়ে ১০টার দিকে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে আমার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গেটে এসে বাধার সম্মুখিন হই। এতদূর থেকে পরীক্ষা দিতে এসে আবার ফিরে যেতে হবে, যা সত্যিই দুঃখজনক।’
জয়পুরহাট থেকে আসা আহসান হাবিব রনি বলেন, ‘এক সঙ্গে এতগুলো মানুষের মিছিল, স্লোগান ও মারমুখী আচরণে পরীক্ষা দিতে এসে ভয় পেয়ে যাই। এতদূর থেকে এসে পরীক্ষা দিতে পারলাম না। তার ওপর অতিরিক্ত যাতায়াত ভাড়া তো আছেই।’
নাটোর থেকে আসা প্রিয় নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষা হবে না সেটা আমাদের আগে জানালে ভালো হতো। এরকম পরিস্থিতিতে তাহলে পরতে হতো না। শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চাকরি কে পাবে তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই। তবে অস্বচ্ছতা দূর করে চাকরির নির্ধারিত বয়সসীমা উঠিয়ে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আমারা অবস্থান নিয়েছি।’

 

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ও এমনকি এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ধারিত কোনও বয়সসীমা ছিল না বলে তিনি দাবি করেন।
ডাবলু সরকার আরও বলেন, ‘এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দাবিতে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নাতি-নাতনিদের কোটা সংরক্ষণের দাবিতে অনশন করেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবিটিও আমলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত করেছিলাম। সে অনুযায়ী আমরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, কিন্তু বহিরাগতরা এসে বিশৃঙ্খলা করে দুইটি পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। দাবি বা অভিযোগ আমাদের লিখিতভাবে না জানিয়ে এভাবে পরীক্ষা বন্ধ করা দুঃখজনক।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর রাবিতে সকালের একটি নিয়োগ পরীক্ষার সাক্ষাৎকার বন্ধ করে দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাবির প্রোভিসি সারোয়ার জাহান সজলসহ আরো এক শিক্ষককে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর