রাবিতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি: ইউজিসির শুনানিতে যাননি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি:
নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ডাকা গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করেননি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

অথচ উপাচার্য অধ্যাপক সোবহানের সম্মতিতেই আজ শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই গণশুনানির আয়োজন করে ইউজিসি।

এ বিষয়ে ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক দিল আফরোজা বেগম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘শুনানিতে অধ্যাপক আব্দুস সোবহান উপস্থিত হননি। আর অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া শারীরিক অসুস্থতার কারণে থাকতে পারবেন না বলে আগে থেকেই জানিয়েছিলেন। শুনানির নির্ধারিত সময়ে আমরা বসেছিলাম। একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ তবে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাবে না বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত তিনশ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ইউজিসি’র কাছে জমা দেয় ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারে আন্দোলনরত সাবেক ভিসি মিজানউদ্দীনপন্থী শিক্ষকেরা। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে ধোঁকার অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য, অ্যাডহক ও মাস্টাররোলে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য, ভিসি’র বাড়ি ভাড়া নিয়ে দুর্নীতিসহ ১৭টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়।

ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগগুলোর বিষয়ে কথা বলতে ইউজিসি অধ্যাপক সোবহানকে করোনার কারণে ভার্চুয়্যাল শুনানিতে অংশ নিতে অনুরোধ করে। তবে অধ্যাপক সোবহান সামনা-সামানি কথা বলার প্রস্তাব করলে গণশুনানির আয়োজন করে ইউজিসি। গত বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অভিযোগকারী শিক্ষকদের নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অভিযোগকারী শিক্ষকরা তাদের অভিযোগের বিষয়ে তথ্য ও প্রমাণাদি পেশ করেন।

এরই মধ্যে শুনানিতে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে গত ৯ সেপ্টেম্বর ইউজিসিকে চিঠি দেন অধ্যাপক সোবহান। চিঠিতে গণশুনানিকে বে-আইনি, আদালত অবমাননাকর ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্বের শামিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য বিকেলে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে গত মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে কর্তৃত্ববিহীন তদন্ত কমিটির তদন্ত বন্ধ করতে অনুরোধ করেছি। কারণ ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন করার এখতিয়ারই নাই। কমিটি গঠনে কমিশনের যে অ্যাক্ট সেই অ্যাক্টে এই ক্ষমতা নাই। তাছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করতে হলে উপাচার্যের মর্যাদার একধাপ উপরের পদমর্যাদার সদস্যদের দিয়ে করতে হবে। যেহেতু ইউজিসির গঠিত তদন্ত কমিটিতে এর ব্যত্যয় ঘটেছে। সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

এদিকে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে শুনানিতে থাকতে পারবেন না বলে আগে থেকেই ইউজিসিকে জানিয়েছিলেন অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। তাকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

স/অ