রাজশা্হীতে হঠাৎ পুকুরে গ্যাস, একরাতে কোটি টাকার মাছের ক্ষতি

বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈরি আবহাওয়ার কারনে পুকুর জলাশয়ের পানিতে গ্যাসের সৃষ্টি হয়ে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়ায় মাছ মরে মৎসচাষীদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, হঠাৎ করে মাছ মরার কারণে মৎস্যচাষীরা বিপাকে পড়েছেন। নিরুপায় হয়ে তারা মাছ ধরে এনে বিভিন্ন উপজেলার হাটে বাজারে কম দামে বিক্রি করছে।

বাগমারা উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ার কারণে পুকুর জলাশয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়ায় মাছ মরে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার গোয়ালকান্দি, চেউখালী, বালানগর, গোপালপুর, মোহনগঞ্জ, ঝিকরাসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ পুকুর, জলাশয় গুলোতে মাছ মরার দৃশ্য দেখা গেছে। হাটে-বাজারে গিয়েও একই চিত্র চোখে পড়ে। শত শত মৎস চাষিরা বাজারে মরা মাছ নিয়ে ভিড় জমায়। এলাকার লোকজন মাছের আড়ৎ গুলোতে ভিড় জমায়।

বুধবার (২আগষ্ট) সকালে উপজেলার মাদারীগঞ্জ, ভবানীগঞ্জ, হাটগাঙ্গোপাড়া, তাহেরপুরসহ বিভিন্ন মাছের আড়ৎ গুলোতে লোকজনের ভিড় লক্ষ করা গেছে। ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও সিলভার মাছ গুলো ৪০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত মাছ ক্রয় করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার মাছ মরার কারণে না কিনেই বাড়িতে ফিরে গেছে।

বালানগর গ্রামের মৎসচাষী আব্দুল মতিন জানান, সকালে জানতে পারেন তার পুকুরের মরা মাছ ভাসছে। বিষয়টি জেনে পুকুরে গেলে ততক্ষণে অনেক মাছ মরে ভেসে ধারে লাগে। পরে মাছ গুলো কিছু অংশ তুলে বাজারে নেয় বাকি মাছ পুকুরে পচে গেছে।

একই ভাবে উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের বাবুল হোসেন জানান, তার পুকুরের অর্ধেকের বেশে মাছ মরে গেছে। বাকি কিছু মাছ পকুরে রয়েছে। এতে করে তার প্রায় ৩ লক্ষাধিক ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে স্বরজমিনে মাদারীগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ মাছ আড়তে গেলে অগণিত মরা মাছের দৃশ্য চোখে পড়ে। ক্রেতাদের মধ্যে কেউ কেউ দাম কম পেয়ে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত মাছ ক্রয় করছে বলে জানা গেছে। তিন থেকে চার কেজি ওজনের বড় বড় রুই, কাতলা, সিলভার ও ব্রিগেট মাছ গুলোর দাম খুবই কম দেখা গেছে। মাছের দাম কম হওয়ায় এলাকার লোকজনকে মাছ কেনার জন্য মাছ বাজারে ভিড় জমাতে দেখা যায়। মাছ চাষীরা মাছ মরার কারন জানতে না পেরে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন বলে এলাকার একাধিক মাছ চাষীরা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন জানান, দুর্যোগ পরবর্তি সময়ে পুকুর গুলোতে অক্সিজেনের সল্পতা দেখা দেয়। পুকুরে অতিরিক্ত মাছ থাকলে ওই সকল পুকুর গুলোর মাছ মরার সম্ভাবনা বেশী। তবে যাদের পুকুরে পরিমিত মাছ আছে তাদের ক্ষতি কম হবে। দুর্যোগ দেখা দিলে পুকুরে বেশী পরিমান মাছ থাকলে সে গুলো মেরে কমিয়ে দিলে ওই সকল পুকুরে মাছ মরার সম্ভাবনা থাকে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

স/অ