রাজশাহী-৩: সুবিধাজনক অবস্থায় আয়েন, বিএনপিতে সংশয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর অন্যতম কৃষিনির্ভর দুটি উপজেলা হলো পবা-মোহনপুর। পবা উপজেলার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বারনই নদী। আর মোহনপুরের সীমান্ত এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে শিব নদী। দুটি নদীতেই কেবল বর্ষাকালজুড়ে পানি থাকে। আর সুস্ক মৌসুমে শিব নদীর বুকজুড়ে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ সবুজ ধান। এমন বিচিত্রময় দুটি নদীর মতোই পবা-মোহনপুরের রাজনীতিতেও যেন বৈচিত্রেভরা।

এই দুটি উপজেলাকে নিয়ে রাজশাহী-০৩ (পবা-মোহনপুর) আসনটি পুর্ণগঠন হয়েছে ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে। আগে রাজশাহী-৩ আসনটি ছিল মোহনপুর-বাগমারাকে কেন্দ্র করে। ২০০৮ সালে এই আসনটি পুর্ণগঠন হওয়ার পর থেকে অনুষ্ঠিত দুই বার সংসদ নির্বাচনে এখানে এমপি হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। প্রথম বার নির্বাচিত হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। কিন্তু তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায় আর তঁকে সুযোগ দেয়া হয়নি। ফলে গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে তরুণ উদিয়মান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আয়েন উদ্দিনের ওপর ভরসা রাখে ক্ষমতাসিন দলটি। ওই নির্বাচনে রাজশাহীর ৬টি আসনের মধ্যে যে দুটি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল-সেটির মধ্যে পবা-মোহনপুর আসনও ছিল।

আয়েন মনোনয়ন পাওয়ার কারণে এখানে তার বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে পড়েন সে সময়ের এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। কিন্তু আয়েনের কাছে প্রায় ৬৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। এর আগে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত পবা-বোয়ালিয়া মিলে রাজশাহী-২ আসনে এখানে এমপি ছিলেন বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। তবে ২০০৮ সালে আসন পুনর্বিন্যাস হওয়ার পরে এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের দখলে রয়ে গেছে। এবার আসনটি দখল নিতে চায় বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ চাই ধরে রাখতে। অন্যদিকে জোটগত নির্বাচন হলে গতবারের মতো এবারও জামায়াতের পক্ষ থেকে এই আসনটিতে ছাড় দেওয়া হবে না-এমনটিও শোনা যাচ্ছে।

প্রয়োজনে জামায়াতের একক প্রার্থী করা হতে পারে-এমনও শোনা যাচ্ছে ভিতরে ভিতরে। এর ফলে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী নিয়ে এখানে রয়েছে নানা সংশয়। তবে এরই মধ্যে নিজেদের অবস্থান পাকা করতে নিজ নিজ জায়গা থেকে যে যার মতো মাঠে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্যপ্রার্থীরা। এলাকার রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজার এবং গ্রামের মোড়গুলোতেও সভা পাচ্ছেন প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনসহ নানাভাবে প্রচারণার মাধ্যম।

আওয়ামী লীগ:
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, গত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকে ক্রমেই নিজের অবস্থানটি অনেকটা পোক্ত করে নিতে থাকেন বর্তশান এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা আয়েন। আয়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। ছাত্রনেতা থাকা অবস্থায় তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণও করেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে হুট করেই এমপি প্রার্থীর তালিকায় নাম ভেসে উঠে এই তরুণ নেতার। রাজশাহীর মধ্যে একেবারে বয়েস নবিন এই নেতা।

যদিও তাঁকে সরিয়ে আগামী নির্বাচনে এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দখল নিতে অব্যাহত চেষ্টা চালাতে থাকেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তবে অনেকটা পরিচ্ছন্ন নেতা আয়েনকেই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিচ্ছে বলে এরই মধ্যে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে মাঠপর্যায়ে। আয়েনকে প্রার্থী হিসেবে গ্রিন সিগন্যালও দিয়ে গেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

সর্বশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর আয়েনের অনুরোধে সাড়া দিয়েই প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা পবায় জনসভা করে যান। প্রধানমন্ত্রীর ওই জনসভার পর আয়েনের অবস্থান আরও শক্ত হয়েছে বলেও মনে করছেন এখানকার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

এর কিছুদিন আগে এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন মোহনপুরে এসে ঘোষণা দেন আগামী নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হিসেবে আয়েনকেই মনোনয়ন দিবে আওয়ামী লীগ। এসব বাস্তবতায় আগামী নির্বাচনে আয়েনই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমন সরগোলই চলছে বেশ জোরে-সরে। তার পরেও রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই, যে শব্দটি আছে সেটির ওপর ভরসা রেখে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে এখনো হাল ছাড়ছেননি মনোনয়ন প্রত্যাশী আরও অন্তত আধাডজন খানেক আওয়ামী লীগ নেতা। তাঁরাও এরই মধ্যে মনোনয়ন দৌড়ে মাঠে নেমে নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

পবা-মোহনপুর আসনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যেসব প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন, তাঁরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বেগম আক্তার জাহান, সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেছা তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান মনোনয়ন চাইবেন। তবে তাঁদের মধ্যে কিছুটা অবস্থান করে নিয়েছেন এমপি আয়েন উদ্দিনের পরে আসাদুজ্জামান আসাদ।

আসাদ জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এ আসন থেকে মনোনয়ন ছিনিয়ে নিতে। এ নিয়ে কখনো কখনো এমপি আয়েন গ্রুপের সঙ্গে আসাদ গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে উত্তেজনা বা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। আবার দুই প্রার্থীই একে অপরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে অভিযোগ-অনুযোগও করে চলেছেন।

অন্যরাও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। কেউ কেউ নিয়মিত গণসংযোগও করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বেগম আক্তার জাহান বলেন, ‘আসনটি ২০০৮ সালে নতুন হয়েছে। তখন থেকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছি। ২০১৪ সালেও মনোনয়ন চেয়েছি। ২০১৯ সালেও মনোনয়ন চাইবো। এসব কারণে সাধারণ আসনে প্রার্থী হতে চাই।’

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সবার আকাঙ্খা থাকে সংসদ সদস্য হওয়া। এখানে আমিও ব্যতিক্রমী নয়। তাই আমি আগামী নির্বাচনে এমপি পদে অংশগ্রহণ করতে চাই। এর জন্য আমি রাজশাহীর-৩ আসনের জন্য সর্বদা মাঠে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি মাঠপর্যায়ের জরিপে প্রার্থী করা হলে আমি মনোনয়ন পাবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার দায়িত্ব হলো, প্রত্যেকটি আসনেই নৌকার পক্ষে কাজ করা। কাজেই নৌকা প্রতীকে যিনিউ মনোনয়ন পাবেন, তার হয়েই আমাকে কাজ করতে হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান বলেন, ‘স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতি করছি। নিপিড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার ত্যাগ-তিতিক্ষা বিবেচনা করলে নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে আশা রাখি। আমি নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। মনোয়ন পেলে জয়ী হবো বলেও বিশ্বাস করি।’

বর্তমান এমপি আয়েন উদ্দীন বলেন, ‘আমি এলাকার সন্তান হিসেবে সবসময় মাঠে থেকেছি। এমপি হয়েও জনগণের পাশেই ছিলাম। পবা-মোহনপুরের উন্নয়নের জন্য আমি তরুণ নেতা হিসেবে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছি। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে আবারো প্রার্থী হতে চাই। এর জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। পবা-মোহনপুরের পা-ফাটা মানুষদের বিপদে আপদে ছুটে যাচ্ছি, তাদের পাশে। এভাবেই রাজনীতি করতে চাই সারাজীবন। যেন জনগণ আমাকে সবসময়ে কাছে টেনে নিতে পারেন। ’

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর হাতকে শক্তিশালী করতে হলে এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আবারো আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হলে নৌকার বিজয়ের কোনো বিকল্প নাই। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী করতে নৌকার হয়েই কাজ করতে হবে আমাদের। আমি সেই কাজটিই করে যাচ্ছি। এখন দল যাকে মনোনয়ন দিবেন, আমাদের তাঁর হয়েই কাজ করতে হবে। দলকে জিতিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’

বিএনপি: বিএনপির সম্ভব্য প্রার্থীর তালিকায় এখন যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক এমপি ও প্রবীন নেতা কবীর হোসেন, রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড: শাহিন সকত, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু, যুগ্ম সম্পাদক রায়হানুল আলম রায়হানর। তাঁদের মধ্যে এখানে সবচেয়ে বেশি নাম -শোনা যাচ্ছে শফিকুল হক মিলন এবং মতিউর রহমান মন্টুর নাম।

দলের নেতাকর্মীদের দেওয়া তথ্য মতে, স্থানীয় বিএনপির নেতাদের মধ্যে জোরালো প্রার্থী না থাকায় এই আসনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে শফিকুল হক মিলন নিজের জায়গাটা অনেকটা পোক্ত করেছেন বলেই মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। আবার হাল ছাড়তে রাজি নন একসময়ের ছাত্রনেতা মতিউর রহমান মন্টুও। তিনিও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য।

জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে যাচ্ছি। রাজশাহীর মানুষদের জন্য এই রাজনীতি করতে একের পর এক অত্যাচার-জুলুমের মুখে পড়তে হয়েছে। এখনো হচ্ছে। তবুও জিয়ার আর্দশ ধারণ করে জনগণের সেবা করার ব্যতয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এ কারণেই আগামী নির্বাচনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। সেই হিসেবে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছি। পবা-মোহনপুরের দুটি উপজেলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ থেকে শুরু করে, প্রচার-মিছিল, গণসংযোগসহ নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করবে আমরা নির্বাচনে যাবো কিনা। নির্বাচনে না গেলে আবার আন্দোলন হবে। সেই আন্দোলনের জন্যই আমরা তৈরী হচ্ছি। সর্বপরি নিজেকে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই জনগণের মাঝে উপস্থাপন করতে কাজ করে যাচ্ছি। এটি পেরেছি বলেও মনে করি। কাজেই আগামী নির্বাচনে পবা-মোহনপুর আসনে দল আমাকে মনোনয়ন দিবে-এমনটা বিশ্বাসও করি। সেই বিশ্বাস ধরে রেখেই এগিয়ে যাচ্ছি।’

মতিউর রহমান মন্টু অভিযোগ করে বলেন, শফিকুল হক মিলন মহানগর বিএনপির নেতা। কিন্তু তিনি জোর করে পবা-মোহনপুরে গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে।’
মতিউর রহমান মন্টু বলেন, ‘ দলের হাইকমান্ড আমাকে এই আসনটিতে মনোনয়ন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এখানকার মানুষের সাথে আমার খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আগে আসনটি শহরের সাথে ছিলো। তখন থেকে এখানেই রাজনীতি করছি। অনেক দিন থেকেই এখানকার মানুষের পাশে আমি রয়েছি। ভোটাররা আমাকে ভালোবাসে। আমিও সময়-সুযোগ পেলেই তাদের কাছে ছুটে যাই। এরই মধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রীক নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। আশা করি দল আমাকে মনোয়ন দিলে অবশ্যই জয় ছিনিয়ে আনতে পারব আমি। ’

জামায়াত:
এদিকে এখনো ঘাপটি মেরে আছে এ আসনটিতে ভোটের রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ানো জামায়াত। জামায়াতের একটি বড় অংশ ভোটার রয়েছে এ আসনটিতে। আর তারাই নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করে প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে। বিশেষ করে জামায়াত প্রার্থী না দিলে তাদের ভোটের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে বড় দুই দলকেই। তবে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে এ আসনটিতে ছাড় দেয়নি জামায়াত। ফলে বিএনপি-জামায়াতের কাটাকাটির মধ্যে অনায়াসে বের হয়ে যায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেরাজ উদ্দিন মোল্লা।

বিএনপির সাথে এবারো জোটগত নির্বাচনে অংশ নিলে সহজেই জামায়াত বিএনপিকে ছাড়া দিবে না এবারো-মনটিই মনে করছেন এখানকার নেতাকর্মীরা। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনেও এ আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী থাকার সম্ভাবনায় বেশি করে দেখছেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে পবায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন জামায়াতেরই প্রার্থী।

এছাড়াও পবা-মোহনপুরে জামায়াতের বিভিন্ন ইউনিয়েন অন্তত ৫ জন প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান রয়েছেন এখনো। আগামী নির্বাচনে এখানে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চাইবেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাবেক নায়েবে আমির মজিবুর রহমান। তার ঘোনিষ্ট একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিতও করেছে। বিএনপির সঙ্গে এখানে ঐক্য হলে জামায়াতকেই পবা-মোহনপুরের এ আসনটি ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। আর সেটি হলে জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির মজিবুর রহমানকে মনোনয়ন হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে।

অপরদিকে জাতিয় পার্টি থেকে এবার এ আসনে নগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি এরই মধ্যে মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এবার আমি মনোনয়ন নেবার চেষ্টা করবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

স/আর