রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ দিনে ৭ সাইকেল চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বেড়েছে সাইকেল চুরির চক্র। গত ১৫ দিনে ক্যাম্পাস থেকে সাতটি সাইকেল চুরি হয়েছে বলে প্রক্টর অফিস থেকে জানা গেছে। তবে তাদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন শিক্ষার্থীরা।

প্রক্টর সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী, একজন কর্মচারী ও একজন শিক্ষকের ছেলের সাইকেল চুরি হয়েছে। যে পাঁচ শিক্ষার্থীর সাইকেল চুরি হয়েছে তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অনিল চাকমা, আরবি বিভাগের নূর আলম নেহাল ও ইয়াসির আরাফাত সিফাত, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আসমাউল ইসলাম এবং গণিত বিভাগের জাহিদ হাসান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন এ চক্রের সদস্যরা। এরপর সুযোগ বুঝে তালা ভেঙে সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। চক্রের সদস্যদের পিঠে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মতো ব্যাগ ঝুলানো থাকে যেন কেউ বুঝতে না পারে তারা চোর। অনেককেই আবার চশমা পরে স্মার্ট লুক নিয়ে সাইকেল চুরি করতে দেখা গেছে।

যাদের সাইকেল হারিয়েছে তারা জানান, সবার সাইকেলই নতুন। দু-তিন মাসের মধ্যে কেনা হয়েছে এমন সাইকেল চুরি বেশি হচ্ছে। তবে তাদের ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের অপারগতা আছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘আমরা থানায় অভিযোগ করছি কিন্তু তাতে কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। অভিযোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাম্পাসে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

সর্বশেষ রোববার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের নিচ তলা থেকে জাহিদ হাসানের সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে।

জাহিদ জানান, সকালে ক্লাস চলাকালে তার সাইকেলটি চুরি হয়েছে। ক্লাস শেষে সাইকেল নিতে গিয়ে সাইকেলটি নির্দিষ্ট জায়গায় না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। এরপর প্রশাসনের সহায়তায় সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলে দেখা যায় একজন কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে এসে তালা ভেঙে সাইকেলটি নিয়ে যাচ্ছে।

পরিবারের কষ্টে অর্জিত ১০ হাজার টাকা দিয়ে নতুন সাইকেল কিনেছিলেন নূর আলম। কে জানতো এ নতুন সাইকেল তার কাল হয়ে দাঁড়াবে। আট দিন হলো তার সাইকেলটি চুরি হয়েছে। এখন হতাশায় ভুগছেন তিনি।

নূর আলম বলেন, বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছিলাম এবং কিছু টাকা বন্ধু বান্ধবের কাছ ধার নিয়ে সাইকেলটি কিনেছিলাম। কিন্তু মাস খানেক না যেতেই সাইকেলটি চুরি হয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ ঘেটে দেখেছি এবং চোরের ছবিও আমার কাছে আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগের পরও কোনো আশ্বাস পাইনি। আমার সাইকেল হারানোর পর আরও চারটি সাইকেল চুরি হয়েছে। আমার মতো যেন আর কারও সাইকেল না হারাক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক বলেন, চোর ধরার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ থানার পুলিশ প্রশাসনের। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া ভিডিও ও ছবি নিয়ে মতিহার থানায় পাঠাচ্ছি। এরই মধ্যে দুটো সাইকেলের গ্যারেজ টেন্ডার পাস হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব কাজ শুরু হবে। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বসে এ নিয়ে কথা বলবো।