রাজশাহী প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ: সেরা ফাইটার রাজশাহী

আব্দুল্লাহ আল মারুফ:

শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ ২০২১-২২ এ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফাইটার রাজশাহী। বুধবার লীগের শেষ ম্যাচে তারা মাত্র ২২ রানে হারায় মুক্তি সংঘকে। তবে হেরেও নীট রানরেটে বৈকালি সংঘকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় হয়েছে মুক্তি সংঘ। এর ফলে আগামী মৌসুমে রাজশাহী প্রিমিয়ার ডিভিশনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো দল দু’টি (ফাইটার রাজশাহী এবং মুক্তি সংঘ)।

চলতি লীগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটি মুক্তি সংঘ ও ফাইটার রাজশাহীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হলেও কাগজে কলমে ম্যাচটির সাথে জড়িয়ে ছিলো বৈকালি সংঘের নাম। ৮ ম্যাচের সবগুলোতে জিতে ফাইটার রাজশাহী আগেই প্রিমিয়ার লীগে খেলার ছাড়পত্র পেলেও, আজকের ম্যাচের উপর নির্ভর করছিলো, কোন দলটি লীগ সেরা হবে এবং কোন দলটি দ্বিতীয় তথা শেষ দল হিসাবে প্রিমিয়ার লীগে খেলার ছাড়পত্র পাবে! অর্থাৎ, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইটি মুক্তি সংঘ এবং ফাইটার রাজশাহীর মধ্যে হলেও, প্রিমিয়ার লীগের ছাড়পত্রের লড়াইটি ছিলো মূলত মুক্তি সংঘ এবং বৈকালি সংঘের মধ্যে।

লীগ সেরা হওয়ার পাশাপাশি প্রিমিয়ার লীগে খেলার ছাড়পত্র পাওয়ার এ মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি বুধবার নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, শিশিরের কারনে রাজশাহী মহিলা ক্রীড়া কম্প্লেক্সের আউট ফিল্ড ভেজা থাকায় খেলা শুরু হতে বিলম্ব হয়। ফলে কমতে থাকে ম্যাচের পরিসর! শেষ পর্যন্ত মাঠ খেলার উপযোগী হলেও ম্যাচ নেমে আসে ৩৮ ওভারে এবং কার্টেল ওভার এই ম্যাচে টস জিতে মুক্তি অধিনায়ক ফাইটার রাজশাহীকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়।

টস জিতে মুক্তি অধিনায়কের ফিল্ডিং করার সীদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমান করতে বল হাতে যেন ইনিংসের শুরু থেকেই নিজের কাঁধে সব দ্বায়িত্ব তুলে নেন মুক্তির ওয়াহিদুজ্জামান ইমন! মূলত ইমনের বোলিং তোপেই একটু একটু করে ভেঙ্গে পড়তে থাকে প্রথম ব্যাট করতে আসা ফাইটারের ব্যাটিং লাইন! তবে সে ভাঙ্গনের মধ্যে দাড়িয়েও যেন দলকে আলো-আশার গান শোনাতে থাকেন ফাইটারের অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার সাজিদ ও সুমন। মূলত এ দু’জনের কল্যাণেই ফাইটার পায় সম্মানজনক স্কোর। ৪০ বল বাকি থাকতে তারা অল আউট হয় ১৪৬ রানে! সাজিদ ৩৪ এবং সুমন করেন ২৮ রান। মুক্তির হয়ে ইমন মাত্র ৩০ রান দিয়ে সাজঘরে ফেরান ফাইটারের ৫ ব্যাটারকে। এছাড়া তৌফিক পান ২টি উইকেট।

ফাইটারের ইনিংস শেষ হওয়ার সাথে সাথেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি প্রিমিয়ার লীগে খেলার ছাড়পত্র পাওয়ার হিসাব-নিকাশ কষতে বসে মুক্তি সংঘ। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বুঝতে পেরে তারা মনোযোগী হয়ে ওঠে প্রিমিয়ার লীগে খেলার ছাড়পত্র নিশ্চিত করার দিকে। বড় হার এড়াতে পারলেই মিলবে ছাড়পত্র, আর সে কারনেই ফাইটারের দেওয়া ছোট্ট চ্যালেঞ্জ জয় করার পরিবর্তে তারা লড়তে থাকে বড় হার এড়াতে! এতে তারা সফলও হয় শতভাগ। এমনকি বড় হার এড়ানোর লড়াই করতে করতে একটা সময় তারা ফাইটারের ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ জয় করার খুব কাছাকাছি পৌছে যায়। কিন্তু ইনিংসের প্রথম থেকেই তাদের ব্যাটারদের রান তোলায় ধীর গতি সে চ্যালেঞ্জ জয়ের পথে কাল হয়ে দাঁড়ায়। ২১ বল বাকি থাকতেই তারা থমকে যায় জয় হতে মাত্র ২২ রানের দুরত্বে! দলের পক্ষে দলীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন আশিক, এছাড়া জাহাঙ্গীর করেন ১৯ রান। ফাইটারের সুমন, বারেক ও সুজন প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট লাভ করেন।

এ জয়ে ৯ ম্যাচের সবগুলোতে জিতে লীগ সেরা হলো ফাইটার রাজশাহী। ৯ ম্যাচের ৭টিতে জিতে মুক্তি সংঘ দ্বিতীয় এবং সমান সংখ্যক জয় নিয়েও নীট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় তৃতীয় হয়ে লীগ শেষ করলো বৈকালি সংঘ।

স/আর