নিজস্ব প্রতিবেদক :
কোটাসংস্কার আন্দোলনের জের ধরে রাজশাহীতে বন্ধ রয়েছে দুরপাল্লার যানবাহন। একই সাথে বন্ধ রয়েছে ট্রেন ও লোকার বাস। এতে চরম দূভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত দূপাল্লা বা লোকাল কোনো বাস রাজশাহীর কেন্দ্রেীয় বাসটার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি।
এমন কি গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ট্রেন চলাচল সম্পুর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সারাদেশের সাথে রাজশাহীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। তবে রাজশাহীর রুটগুলোতে কখন নাগাত ট্রেন বা বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে নিশ্চিত করে বলতে পারছে না রেল বা বাস কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, কোটাসংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রথমত ট্রেন বিঘ্ন ঘটায়। এরপর বাস চলাচলের উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে ওইদিন সকালের দিকে যেসব ট্রেন রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে দুপুরের মধ্যে পৌছাতে পেরেছে সেসব ট্রেনের যাত্রীরা নিজ গন্তব্যে পৌছাতে পেরেছেন। দুপুরের পর যে ট্রেন রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে গেছে তারা আর স্টেশনে পৌঁছাতে পারেনি। বিভিন্ন রুটে আটকে আছে ট্রেন। এতে বাধ্য হয়ে রাত থেকে রাজশাহী স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন আর দেশের কোথাও ছেড়ে যায়নি। কর্তৃপক্ষ রাতেই সব ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।
ট্রেন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সকাল থেকে যাত্রীদের রাজশাহীর রেল স্টেশনে এসে বসে থাকতে দেখা যায়। তারা দুপুর পর্যন্ত ট্রেন ছাড়ার কোনো উদ্যোগ না দেখে ফিরে যান। বিশেষ করে দুপুরের পর পশ্চিম রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রাজশাহী স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যাবে না। অনেকটা হতাশ হয়েই যাত্রীরা স্টেশন ছেড়ে চলে যান। বিশেষ করে সকালে দুরদূরান্ত থেকে ছোট যানবাহণে অনেক যাত্রী রাজশাহী স্টেশনে আসেন। আসার পর তারা জানতে পারেন ঢাকাসহ সব রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ। জানার পরও তারা পুনরায় বাড়ি ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
রাজশাহীর রেল স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর করিম জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে রাজশাহী স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। কারণ ইতোমধ্যে যেসব ট্রেন স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে সেসব ট্রেন রাস্তাতেই পড়ে আছে। আটকা পড়া ট্রেন নিজ গন্তব্যে পৌঁছার পর রাজশাহী স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়া হবে। তবে কখন নাগাদ ট্রেন ছাড়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
এদিকে ট্রেনের সাথে রাজশাহীতে বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন রুটের দুরপাল্লা ও লোকাল বাস। বৃহস্পতিবার রাত থেকে রাজশাহী থেকে কোনো বাস কোনো রুটে ছেড়ে যায়নি। পরের দিন শুক্রবারও বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের রাজশাহীর বাসস্ট্যান্ডে এসে বসে থাকতে দেখা যায়। যাত্রীরা বাস স্ট্যান্ডে এসে বসে থাকলেও অনেক কাউন্টারের লোকজন ছিল না। যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট কেটেও বাস বন্ধ থাকায় নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন নি। বিশেষ করে রাতে বাস চলাচল করতে পারে এমন আশায় যাত্রীরা বিকেল থেকে জড়ো হতে থাকেন বাস স্ট্যান্ডে। কিন্তু তাদের আশায় গুড়ে বালি হয়।
কাউন্টার থেকে যাত্রীদের জানানো হয়, রাস্তার অবস্থা ভাল না, যার কারণে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তার অবস্থা ভাল হলে তারপর বাস চলাচল শুরু হবে। টিকিট কাউন্টারের লোকজনদের এমন কথা হতাশ হয়েই যাত্রিরা বাড়ি ফেরেন। এছাড়াও সকাল ও বিকেলে যেসব যাত্রীরা বাস স্ট্যান্ডে উপস্থিত হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেরই টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে কাউন্টার থেকে। তবে ঢাকাসহ দরপাল্লার বাসের কাউন্টারে কর্মরত কর্মচারিরা বলছেন কখন নাগাদ বাস ছড়তে পারবো সেটি আমরা বলতে পারছি না।