রাজশাহীর পদ্মায় মৃত বৃদ্ধার লাশ টেনে তুললেন মানসিক প্রতিবন্ধী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা পাগলদের দেখে হাসাহাসি করি। তাদেরকে ক্ষেপিয়ে মজা নিই। তাদের চলাফেরা আমাদেরকে মজা দেই। কিন্তু পাগলরাও কখনো কখনো অবাক করা কাণ্ড করে, তা কখনো আমরা চিন্তাও করি না। পাগলদেরও যে সাধারণ মানুষের ন্যায় হৃদয়, মন, আত্মা আছে তা হয়তো আমরা ভাবি না। তারা ভালবাসা পেতে চায়, ভালবাসতে চায় তা হয়তো আমরা বুঝি না কিংবা মানি না। এমনই ভালবাসার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন এক মানসিক প্রতিবন্ধী। তার কাণ্ড অবাক করেছে সবাইকেই। রাজশাহীর বাঘায় পদ্মায় মৃত বৃদ্ধার লাশ টেনে তুলে সবাইকে অবাক করেছেন ওই মানসিক প্রতিবন্ধী। এ খবর শুনে লাশটি দেখতে ভিড় করেন বহু মানুষ। এ ঘটনা আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটার।

এ খবর শুনে চারদিকে মানুষ ওই মানসিক প্রতিবন্ধী এবং লাশটিকে দেখতে ভিড় করেন পদ্মাপাড়ে। রোববার দুপুুুরে পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলার পদ্মায় গোসল করতে যান ছালেযান বেওয়া নামের ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা। পরে পানিতে তলিয়ে যান তিনি। পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাননি। সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর খেয়া ঘাটের পাশে বৃদ্ধার লাশ দেখতে পেয়ে টেনে তুলেন ওই এলাকার এক মানসিক প্রতিবন্ধী। তারপর লুঙ্গি দিয়ে লাশটিকে ঢেকে তার পাশে বসে বসে পাহারা দিতে থাকেন ওই প্রতিবন্ধী। এটা দেখে স্থানীয়রা চারদিক থেকে তার কাণ্ড দেখতে ভিড় করেন।

এ ঘটনায় অনেকে মানসিক ওই প্রতিবন্ধীকে স্যালুট জানিয়েছেন। কেউ আবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কৃতজ্ঞতা এবং স্যালুট জানিয়েছেন ওই প্রতিবন্ধীকে।

ফেসবুকে এক ব্যক্তি লিখেন-‘বিষয়টি সত্যি আমার নজর কেড়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধা পদ্মায় গোসল করতে নেমে তলিয়ে যান। পরে তার লাশ ভেসে উঠলে সেখানে থাকা একটি মানসিক প্রতিবন্ধী (পাগল) বৃদ্ধার লাশটি দেখেতে পেয়ে টেনে তুলে গামছা দিয়ে ঢেকে রেখে বসে বসে পাহারা দিচ্ছে তার পরিবারের আসার অপেক্ষায়। ——– তোমাকে সুশিল ও মেধাবী সমাজের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও স্যালুট।’

পরে খবর পেয়ে বাঘা থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। উদ্ধারকৃত ছালেজান বেওয়া লালপুর উপজেলার মহরকয়া গ্রামের মৃত আলী মুদ্দিনের স্ত্রী।

স/শা