রাজশাহীর টি-বাঁধে খাবার ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য,জনসাধারণের দুর্ভোগ

জেসমিন আরা ফেরদৌস:

রাজশাহী নগরীর অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্রের মধ্যে একটি টি-বাঁধ। পদ্মা নদীর নৈসর্গিক ও প্রকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই এখানে ভিড় জমায় সৌন্দর্যপ্রেমীরা। শুধু মাত্র রাজশাহীবাসীরাই নয়, দেশের বিভিন্ন জেলার ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনাও দেখা যায় এখানে। বর্তমানে নদীর পানি বেড়ে যাওয়াই জনসমাগম যেন বহুলাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসব দর্শনার্থীদের কেন্দ্র করেই নানরকম খাবার দোকানের পসরা নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এলাকাজুড়ে প্রায় ৪০ এর অধিক মুখরোচক খাবারের দোকান রয়েছে। তবে এসব খাবার দোকানের কারণে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে দর্শনার্থীদের।

নগরীর মহিষবাথানের বাসিন্দা সোহাগ আহমেদ। ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন টি-বাঁধে। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেখতে এসেছি। কিন্তু আগে বসার জন্য বা দাড়িয়ে থাকার জন্য যেসব ফাঁকা জায়গা থাকতো এখন তা নেই। সব জায়গাই দোকানীদের চেয়ার দিয়ে সাজানো। আবার তারা তাদের এ চেয়ারগুলোতে খাবার কিছু না নিলে বসতে দেয় না আবার কেউ এমনি বসলেও তারা সেটার জন্য টাকা নেয়। অথচ তাদের খাবারগুলো সব সময় স্বাস্থ্যসম্মত হয়না যার কারণে চাইলেও খাওয়া যায়না।

তিনি আরো বলেন, ‘এভাবে যত্রতত্র খাবারের দোকান না রেখে এখানে যদি বসার জায়গার ব্যবস্থা করা য়ায় তাহলে দর্শনার্থীদের জন্য খুবই ভালো হয়।এর পাশাপাশি যদি ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করার জন্য বা খাবার দোকানগুলোর জন্য একটা সুনির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দিলে আমাদের আর এসব ভোগান্তি পোহাতে হবেনা।’

আরো একজন দর্শনার্থী সৌরভ হাসান৷ ছুটির দিনে সূদুর বগুড়া থেকে প্রিয়জনের সাথে নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন তিনি। তিনি জানান,এসব খাবার দোকানীদের জন্য নানারকম ঝামেলা পোহাতে হয়েছে আমাকে। অনেক সময় খাবার ইচ্ছা না থাকলেও বসার জন্য বাধ্য হয়ে খাবার কিনতে হয়। আবার তারা অনেক সময় খারাপ আচরণও করে থাকে। বাইরে থেকে কেউ আসলে তাদের সাথে আচরণও অন্যরকম হয়ে যায়।

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিন জানান,স্থানীয় প্রশাসনের উচিত তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনা।তাদের এসব লাগামহীন আচরণের জন্য তাদেরকে নিয়মের মধ্যে আনা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তারা এখানে ব্যবসা করবে তবে কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে। এটি করলে তারা এবং দর্শনার্থীরা উভয়েই উপকৃত হবো।

টি-বাঁধের এক ফুচকা-চটপটি বিক্রেতা বাপ্পি।প্রায় ৩-৪ বছর যাবত এ পেশায় নিয়োজিত তিনি। তিনি জানান, আগে আমি বাঁধের উপর ফুচকা-চটপটি বিক্রি করতাম৷ বাঁধ বন্ধ করে দেওয়ায় এখন এখানে এসেছি৷ তবে এখানে বসার জন্য কারো অনুৃমতি নেবার প্রয়োজন হয়নি। প্রশাসন যতদিন থাকতে দিবেন ততদিন এখানেই ব্যবসা চলিয়ে যাবো।

এছাড়াও তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে যে চেয়ারগুলো রাখা আছে তা মূলতো কাস্টমারদের জন্যই। কিন্তু কেউ খাবার না কিনলেও আমরা অনেককেই এখানে বসতে দেয়। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ পর যখন কাস্টমাসর এসে দাড়িয়ে থাকে তখন আমরা তাদের উঠে যেতে বলতে বাধ্য হয়।’

স/জে