রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনের সাতকাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রমত্তা পদ্মা তীরবর্তী শহর রাজশাহী। হযরত শাহমখদুমের পবিত্র ভূমির এই নগরীতে প্রায় ৮ লাখ জনসংখ্যার বসবাস। এখানকার ঐতিহ্যবাহী সিল্ক কাপড় যুগ যুগ ধরে যেমন জাদু করা, তেমনি বরেন্দ্র জাদুঘর এক সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা। রাজশাহী একটি ঐতিহাসিক শহর নামেও পরিচিত। এখানে ব্রিটিশ শাসনামল থেকে পাকিস্তান শাসনামলের অনেক নিদর্শনও ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। ঠিক তেমনি এখানকার ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসও অনেক পুরনো।

 

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা একটি আলোকিত নাম। এ অঞ্চলের ক্রীড়ার উন্নয়নে জেলা ক্রীড়া সংস্থার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ বিষযে বিতর্ক রয়েছে।

 

কেউ কেউ বলেন ১৮৯৬ সালে, আবার কেউ কেউ বলেন ১৯০৬ সালে জেলা ক্রীড়া সমিতি (বর্তমানে জেলা ক্রীড়া সংস্থা) গঠিত হয়। বৃটিশ শাসনামলে রাজশাহী ছিল হিন্দু প্রধান এলাকা। নাম না জানা কয়েকজন ক্লাব সংগঠক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সমিতি নামক প্রতিষ্ঠান। ১৯৬০ সাল পর্যন্ত রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গন ফুটবলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

 

পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে সরকার অধ্যাদেশ জারি করে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সমিতিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় রুপান্তর করে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর নবগঠিত  পূর্ব পাকিস্তানে নবউদ্যমে জেলা ক্রীড়া সমিতির কার্যক্রম শুরু হয়।

 

১৯৬১ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জেলা ক্রীড়া সমিতির এই সময়গুলো ছিল সোনালী সময়। স্টেডিয়াম নির্মাণ, ক্রিকেট, ভলিবল ও কাবাডি প্রতিযোগিতা শুরু হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ১৯৭২ সালে জেলা ক্রীড়া সমিতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী নুরুন্নবী চাঁদ।

 

তিনি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকেও রাজমাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সফলতা দেখিয়ে এসেছে। তবে ২০০৪ সালে বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক জাফর ইমামের মৃত্যুর কিছু পর থেকেই রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে অশনীসংকেত বিরাজ করতে থাকে।
তাঁর মৃত্যুর পর কিছু সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রফিউস সামস প্যাডি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

 

তখন থেকেই রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থায় দুর্নীতি-অনিয়মের বিষবৃক্ষ রোপন হতে থাকে। ওই সময় প্যাডির বিরুদ্ধে কয়েক লাখ টাকা আত্মাসাতেরও অভিযোগ ওঠে। এরপর খন্দকার মাইনুল ইসলাম এবং ইমতিয়াজ আহম্মেদ সামশুল হুদা কিসলু সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

 

এর মধ্যে একবার রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থা দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়া সংস্থার মর্যদা লাভ করে। ২০০৭-২০১২ সাল পর্যন্ত কিসলু ক্ষমতায় থাকাকালিন প্রতি বছর এখানে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি, ভলিবল, ব্যাডমিন্টনসহ স্থানীয় পর্যায়ে মোট ১৮টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। ফলে এখান থেকে বেরিয়ে আসে শতশত নতুন খেলোয়াড়। এই কার্যক্রমের জন্য ২০০৭ সালে দেশের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়া সংস্থাও নির্বাচিত হয় রাজশাহী।

 

একটা সময় ছিল যখন রাজশাহীর প্রায় অর্ধশত ফুটবল খেলোয়াড় দেশ সেরা ঢাকার ক্লাবগুলো যেমন মোহামেডান, আবাহনী, ব্রাদাস ইউনিয়ন, ভিক্টোরিয়া, ওয়ারী, বিজেএমসি ইত্যাদিতে নিয়মিত অংশ নিত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে দেশে ও বিদেশের টুর্নামেন্টে  অংশগ্রহণ করে সুনাম অর্জন করেছেন।

 

কিন্তু আশির দশক থেকেই ঢাকা লীগে অংশগ্রহণকারী রাজশাহীর ফুটবলারের সংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকে এবং বর্তমানে তা শূণ্যের কোঠায় পৌঁছেছে। ফুটবলে যখন রাজশাহীর খেলোয়াড় সংখ্যা কমতে থাকে ঠিক সেসময়  ক্রিকেটে সোনালী দিন চলে আসে।

 

প্রায়  ২০০ জন রাজশাহীর ক্রিকেট খেলোয়াড়  ঢাকার প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ, প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে লীগ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বর্তমানে ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও এ সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।

 

রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গণে একসময় যে জমজমাট অবস্থা ছিল, আজ তা অনেকটায় ফ্যাকাশে রুপ ধারণ করেছে। এখন আলো ছড়ানো বলতে শুধুমাত্র ক্রিকেটকেই বেশি বুঝায়। তবে মাঝে মধ্যে অন্য দুই-একটি ইভেন্টও আলোর দ্যূতি ছড়ানোর চেষ্টা করে। তবে সেটিও হয়তো ক্ষণিক সময়ের জন্য। কিছুদিন পরেই সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা বা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অবহেলা অথবা এখানকার অর্থনৈতিক দৈনতায় চাপা পড়ে যায় সেই ইভেন্টের সাফল্যগাঁথা।

 

এর ফলে ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলাতেও রাজশাহী থেকে তেমন আর ভালো খেলোয়াড় সহজে বের হচ্ছেন না। যদিও এখনো অনেক খেলোয়াড় রাজশাহীর মাঠ দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন হরহামেশা। কিন্তু তারাও নানা সুযোগ-সুবিধার অভাবে ভালো কিছু করতে পারছেন না।

 

প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগ বন্ধ হয়ে গেছে। ইমতিয়াজ আহমেদ শামসুল হুদা কিসলু যখন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তখন দ্বিতীয় বিভাগ বাস্কেটবল,  হ্যান্ডবল, কাবাডি ইত্যাদি খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে দ্বিতীয় বিভাগ খেলাগুলো বন্ধ রয়েছে। বিগত সাধারণ সম্পাদকগণ রেলিগেশন প্রথা চালুর ঘোষণা  দিলেও কেউ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হননি।

 

রাজশাহী জেলার খেলাধুলা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদিত সংস্থা জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার রয়েছে ২২টি অঙ্গসংগঠন। এসব অঙ্গগসংগঠনগুলো জেলা ক্রীড়া সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় স্থানীয় পর্যায়ের খেলাধুলার আয়োজন ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

 

সরকারী সামান্য অনুদান ছাড়া রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়ের প্রধান উৎস হাউজি। এছাড়াও দুইশতাধিক দোকানের মাধ্যমেও জেলা ক্রীড়া সংস্থার বেশ আয় হয়ে থাকে। যে হাউজি নিয়ে শহরময় গুঞ্জন, সেই হাউজি কমিটি বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রফিউস সামস প্যাডির আমলে সভাপতি ও সম্পাদক বিহীন অবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে।

 

এতে হাউজির অর্থ নিয়ে স্বচ্ছতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অনেকেই মনে করেন একটি শক্তিশালী মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে প্রতিদিন হাউজির আয়-ব্যয়ের বিষয়টি দেখাশুনা করা উচিত। এতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয় যেমন বৃদ্ধি হবে, তেমনি খেলাধুলা খাতে আরো অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব হবে।

 

হাউজি খেলা বাম্পার সীট বিক্রি নিয়েই সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়। এই বাম্পার সীটের অধিকাংশ টাকা নিজেদেরন মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে তাকে। ওই উপঢৌকন হিসেবে টাকা যায় নগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও হাউজি নিয়ন্ত্রণকারী কয়েকজনকে প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে।

 

এছাড়াও হাউজির মাধ্যমে প্রতি বছর অন্ততপক্ষে কোটি টাকা আয় হয়। এই টাকারও সঠিক হিসেব-নিকেশ দিতে পারেনি সাম্প্রতিক সময়ের প্রতিটি কমিটিই। হাউজি খেলার এই অর্থ দিয়েই বছরজুড়ে বড়বড় ইভেন্টে খেলা চালানো সম্ভব, কিন্তু সেখানেও কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না। জেলা ক্রীড়া সংস্থার ২২টি ইভেন্ট প্রতি বছর চালু থাকার কথা থাকলেও সেগুলোর মধ্যে ফুটবলসহ অন্য ইভেন্টগুলোও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।

 

এর ফলে এখন নতুন নতুন খেলোয়াড়ও বের হচ্ছে না সহজে। আবার গত বছর প্রায় তিন মাস জেলা ক্রীড়া সংস্থা পরিচালিক মুক্তিযুদ্ধ মাঠ দখল করে চালানো হয়েছে বাণিজ্য মেলা। ওই মেলার অর্থ ঢুকেছে ক্রীড়া সংস্থার হর্তাকর্তাদের পকেটে। সেই সঙ্গে ওই বছরসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিকবার মাঠ দখল করে চালানো হয়েছে কনসার্ট। এখান থেকেও লাখ লাখ টাকা আয় করা হয়েছে খেলার উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু সেই টাকাগুলোর অধিকাংশ পকেটে গেছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নিয়ন্ত্রণকারীদের পকেটে।

 

এর বাইরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিশাল স্টেডিয়াম মার্কেটের দোকান ঘর ভাড়া নিয়েও রয়েছে নয়-ছয় এর অভিযোগ। এখানেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকলে প্রতি বছর অন্তত অর্ধ কোটি টাকা আয় হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানেও ঘাপলা করে সামান্য পরিমাণ আয় দেখানো হয়। বাকি টাকা তছরুপ করা হয়।

 
এসব কারণে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পদ দখল নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ঘরোনার নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলে টানা পড়েন। এই পদ দখল নিতে কখনো কখনো দলীয় বিষয়টিকে এখানে পাশ কাটিয়ে দুই দলই একাকার হয়ে যায়। এরপর ক্ষমতায় গিয়ে শুরু হয় অর্থ তছরুপের লড়াই। ফলে বিগত দুটি এবং বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্যের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও স্পষ্ট ধরা পড়েছে।

 

আর আর্থিক এবং রাজনৈতিক এই টানাপড়েনের ফল গিয়ে পুরো জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রীড়াবিদদের ওপরও গিয়ে পড়ছে। এছাড়া ক্রীড়া সংস্থার এফিলিয়েটেড ক্লাবগুলোতে নিয়মিত নির্বাচন না হওয়া, রেলিগেশন পদ্বতি না থাকা এবং অনিয়মিত লিগ, দ্বিতীয় বিভাগ লিগ চালু না করা থ্রি-স্টার বা ফাইভ স্টার মানের হোটেল-মোটেল না থাকার কারণেও এখানকার ক্রীড়ার মান উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে। নতুন নতুন খেলোয়াড়ও বের হচ্ছে না সহজে।

 

এক সময় রাজশাহীর ফুটবল ছিল গৌরব গাঁথা এক নাম। ব্রিটিশ আমলে এবং তৎকালীন পাকিস্তান আমলে মরহুম মোহসীন জামালসহ আরও বেশ কয়েকজন ফুটবলার কলকাতা লীগে খেলেছেন। এখানকার ফুটবল দ্যুতি ছড়িয়েছে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও। রাজশাহীর ফুটবল দলের শামসুল ইসলাম মুন্না তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দলের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় যুব ফুটবল দলের হয়ে রাশিয়াতেও খেলে এসেছেন।

 

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে ভারত সফর করেন ফজলে সাদাইন খোকন ও তসলিম উদ্দিন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলেন হাসানুজ্জামান বাবলু, ফিরোজ, গোলকিপার সাইদুর রহমান, পাপেল।
৬০-৭০’র দশকে ঢাকার মাঠ মাতিয়েছেন হাকিম, জালাল উদ্দিন মোল্লা জালু, মানিক, আলতাব, আনজু, আনফোর, মকলেস, যুবু, সেলিম প্রমুখ। ৮০-৯০’র দশকে মাঠ মাতিয়েছেন ধুলু, পারভেজ, কামাল, বুলবুল , এলান, কচি, বাবলু প্রমুখ। আশির দশকে জাতীয় ফুটবলে রাজশাহী রানারআপও হয়েছে। এরপরে নব্বই’র দশক পর্যন্ত রাজশাহীর ফুটবল দল জাতীয় পর্যায়ে প্রতিটি আসরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে খেলেছে। কিন্তু এখন আঞ্চলিক পর্যায়ই পার হতে পারে না রাজশাহী জেলা দল। এর অন্যতম কারণ হলো, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অব্যবস্থাপনা, স্টেডিয়ামে মারামারি খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা না দেওয়া।

 

ফুটবলে এখানকার নারীদের অবদানও কম ছিলো না। এই তো ২০০৫ সালেও রাজশাহীর নারী ফুটবলার মনা, হাসি, নীলা ও ডায়না দক্ষিণ কোরিয়ায় অুনষ্ঠিত এশীয় যুব অনুর্দ্ধ-১৭ মহিলা ফুটবল টূর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন। আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে দেশের বাইরে সেটিই ছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের প্রথম কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। বাংলাদেশ দলের হয়ে ওই নারী ফুটবল দলে রাজশাহীর ওই চার নারী।

 

১৯৩৬ সালের দিকে ইংল্যান্ডকোরিয়ানথিয়ান ফুটবল দল ভারত সফরে কোলকাতার ক্যামরিয়ান দলের সঙ্গে রাজশাহীতে প্রদর্শনী ফুটবলে ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। এরও কয়েক বছর পূর্বে কোলকাতা মোহনবাগ, ইস্টবেঙ্গল এবং কোলকাতা এফসি রাজশাহীর সঙ্গে এখানে পদর্শনী ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনী দল রাজশাহীর সঙ্গে একটি পদর্শনী ম্যাচ খেলেছিল। এসব এখন কেবলই স্মৃতি হয়ে রয়েছে। আর বাইরের কোনো ফুটবল দল রাজশাহীতে আসে না।

 

ঢাকার বাইরে দেশে প্রথম ক্রিকেট টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল রাজশাহীতে। ১৯৭৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের এমসিসি ক্রিকেট একাদশ বনাম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল দুইদিনের একটি টেস্ট ম্যাচে অংশ নেয়। এটিই আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে রাজশাহীর পরিচিতি ওঠে আসে ওই ক্রিকেট ম্যাচের মধ্য দিয়েই। এরপরও এমসিসি ক্রিকেট দলটি চার বার রাজশাহী সফর করেন।

 

১৯৯৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ ক্রিকেট দল এবং বাংলাদেশ জাতীয় দল এবং ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড ‘এ’ দল রাজশাহী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলেন এই রাজশাহীর মাটিতে। সর্বশেষ এশিয়া গেমস অনুর্দ্ধ ১৯ ক্রিকেট টূর্নামেন্ট-২০০৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে। এই রাজশাহীর কৃতি সন্তান খালেদ মাসুদ পাইলট দেশ ছাড়িয়ে সারা বিশ্বেও এক পরিচিত নাম। এছাড়াও সানু, মুশফিক বাবু, জেম, মর্তুজা, ভোলা রাজশাহীর ক্রিকেটকে উজ্জলতা ছড়িয়েছেন।

 

কুলসুম খাতুন মুন্নি। রাজশাহীর জলকন্যা নামে পরিচিত। জাতীয় সাতার প্রতিযোগিতায় বয়সভিত্তিক ইভেন্টে টি স্বর্নপদক জিতেন তিনি। রাজশাহী নগরীর বেলদারপাড়া এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের এই নারী সাতারুর পাশে ওই সময় এখানকার অনেক রাজনীতিবিদ এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তারা আর বাস্তবায়ন করেননি। ফলে ক্রমেই হারিয়ে যেতে থাকেন মুন্নির সাফল্য।

 

কারাতে খেলায় ফারহানা বেগম, বকুল হোসেন মিলি, মরিয়ম বেগম ফয়সাল আনোয়ার, জালাল হোসেন রাজশাহীর উজ্জল নক্ষত্র। জাতীয় পর্যায়েও এদের অবদান ছিল অনেক। কিš‘ তারাও নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে এক সময়ে হারিয়ে যেতে থাকেন। কারাতে প্রতিযোগিতায় বকুল হোসেন মিলি আন্তজার্তিক পর্যায়ে তৃতীয় হয়েছিলেন।

 

বক্সিং-এ জুয়েল আহমেদ জনি, আল আমিন, খারিজুল ইসলাম, টিপু সুলতানের অবদানও রাজশাহীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অ্যথেলেটিক্স আনিসুর রহমান, সারোয়ার জাহান ছিলেন অদম্য। মহিলা ভলিবলে কামরুন্নাহার বাবলি, সৈয়দা হাসিনা আক্তার মিলি, নাজমুন নাহার পাপ্পাদের নাম এখনো এখানকার ক্রীড়াঙ্গনে উজ্জল হয়ে আছে।
পুরুষ ভলিবলে শাহানাজ ইসলাম জিতু, আশরাফুল আমিন সঞ্চয়, আব্দুল মমিন, রবিউল আলম রবি ছিলেন রাজশাহীর অন্যতম খেলোয়াড়।
টেবিল টেনিসের তুখোড় টুম্মা এখন সংসার নিয়ে ব্যস্ত। জুডর আমেনা আক্তার, তায়াকান্দতে চাদ, মাহামবুব, মোহাম্মাদ রকিদের নাম এখন হারিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে রাজশাহীর সম্ভাববনাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।
হকিতে রাজশাহীর রবি উদ্দিন আহম্মেদ মিন্টু, রিমন কুমার ঘোষ, আশরাফুল ইসলাম শিশু, শামীম রেজা, কৃষ্ণকুমার ও সাবব্বির হোসেন রানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। কৃষ্ণকুমার জাতীয় হকি দলের সহঅধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। বৈকালী সংঘের হকি খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম আজাদ ও মামুন রশিদ নৌবাহিনীতে, সাব্বির রানা, রুম্মন ও আজিজুল হক লিটন সেনা বাহিনীতে আছেন বলে জানিয়েছেন ক্লাবটির সভাপতি মনিরুজ্জামান সানা।

 

যুব হকিতে ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ পরপ দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয় রাজশাহী জেলা দল। চলতি বছরও এটিএন বাংলা আয়োজিত স্কুল চ্যাম্পিয়ন লীগে রাজশাহীর আল হিকমা মুসলিম একাডেমি চ্যাম্পিয়ন হয়। অথচ সেই হকির এখন করুণ দশা। রাজশাহীর হকি খেলোয়াড় তৈরির একমাত্র মাঠটি হলো কালেক্টরেট মাঠ। বৈকালী সংঘের পরিচালনাধিন এই মাঠটিতে গত দুই মাস ধরে চলছে বোণিজ্য মেলার আয়োজন। ফলে হকিসহ সমস্ত খেরা বন্ধ হয়ে আছে এখানে।

 

কাবাডিতে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন রাজশাহীর শিলা খাতুন, রওসন ইয়াজদানি, ভুলু ও নুরুজ্জামান। বাস্কেটবলে রাশেদুল হক রাশেদ বর্তমানে নৌবাহিনীতে আছেন।  অ্যাথেলেটিক্সে ১০০ ও ৪০০ মিটার এবং লংজাম্পে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহীর রুনা খাতুন।

 

পেছনের মানুষ:
রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে অবদানের জন্য এখনো মানুষ স্বরণ করে যাঁদের, তাদের মধ্যে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান এক উজ্জ্বল নখত্রের নাম। কামারুজ্জামানকে রাজশাহীর মানুষ কৃতজ্ঞচিত্তে স্বরণ করে তাঁর বিশাল কর্মযজ্ঞের কারণে। সেই কর্মযজ্ঞের মধ্যে একটি ছিলো ক্রীড়াঙ্গনেও তাঁর পদচারণা। ১৯৬২ সালে তিনি রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

 

ওই বছরই রাজশাহী জেলা স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করেন কামারুজ্জামান। এখানে ২০ হাজারের অধিক দর্শক একসঙ্গে খেরা দেখার সুযোগ লাভ করতে পারে। বিশাল এই স্টেডিয়ামটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে এক নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। যার অবদান কামারুজ্জামানের।

 

এই মহান ব্যক্তি শুধু স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করেই থেমে থাকেননি। রাজমাহীর ক্রীড়াবিদদের মান উন্নয়নেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি। নতুন নতুন খেলোয়াড় বের হয়ে এসেছে তার সময়কালে।

 

রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে আরেক অবদানশীল ব্যক্তি হলেন মরহুম জাফর ইমাম। জাফর নিজেও ছিলেন একজন নামকরা ফুটবলার। তৎকালীন পাকিস্তান আমলে ভিক্টোরিয়ার হয়ে একমাত্র বাঙ্গালী হিসেবে তিনিই খেলতেন। ১৯৫৪ সালে ফুটবলে রাজশাহীর লোকনাথ স্কুলের নাম তখন তুঙ্গে।

 

ওই সময় জাফর ইমাম সপ্তম শ্রেণির ছাত্র চিলেন। সেই সঙ্গে গোলরক্ষক হিসেবে সুনাম কুড়াতে থাকেন তিনি। পরবর্তিতে ভিক্টোরিয়ার হয়ে ১১ জনের মধ্যে মাত্র বাঙ্গালি হিসেবে জাফর ইমাম ঠাই পেতেন দলে। ১৯৬৮ সালের দিকে মরহুম জাফর ইমাম রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

 

তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের পর ১৯৭৭সাল থেকে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার শাখা-প্রশাখার বিস্তৃতি ঘটতে থাকে। ১৯৭৫-১৯৯১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাহী সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৮০-৯০ এবং ১৯৯২-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

 

সেই সঙ্গে রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেন। ক্রীড়া সংগঠক মরহুম জাফর ইমামের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সকে তাঁর নামেই নামকরণ করা হয়।
রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনের আরেক উজ্জল নক্ষত্রের নাম খোদাবক্স মৃধা। যার ধারাভাষ্য শোনার জন্য রেডিও বা টিভির সামনে বসে মানুষ কান পেতে থাকতেন।

 

১৯৭২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে ধারাভাষ্য দিয়েই তিনি রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনের এক স্বর্নজ্বল ব্যক্তিতে পরিণত হন। ৭২ সালে কোলকাতার ইস্টবেঙ্গল ও রাজশাহী জেলা ফুটবল দলের মধ্যেকার প্রদর্শনী ম্যাচে তিনি রেডিওতে ধারাভাষ্য দেন।

 

এরপর ১৯৭৭ সালে তিনি ইংল্যান্ডের এমসিসি একাদশের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের রাজশাহীতে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচের ধারাভাষ্য দেন। সেই থেকে ফুটবল এবং ক্রিকেট দুই বিভাগেই সমানে ধারাভাষ্য দিতে থাকেন দেশবরেণ্য এই ধারাভাষ্যকার।

 

কখনো দেশের মাটিতে বসে আবার কখনো বিদেশের মাটিতে বসে ধারাভাষ্যের মাধ্যমেই তিনি ফুটবল এবং ক্রিকেটসহ দেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিও তুলে ধরার চেষ্টা করেন। রাজশাহী কলেজে এই শিক্ষক শিক্ষকতার পাশাপাশি এই অঞ্চলে ক্রীড়াঙ্গনেও যে অবদান রেখে গেছেন,তা স্বরণীয় হয়ে থাকবে এখানকার ক্রীড়ানুরাগীদের মাঝে।

 

উজ্জলমুখ:
এর বাইরে সমসাময়িককালে ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট, জুনায়েদ আহম্মেদ, সাব্বির রহমান রুম্মন, দেশের গন্ডি পেরিয়ে অন্তজার্তিক পর্যায়েও সুনাম অজর্ন করেছেন। খালেদ মাসুদ পাইলটের হাত ধরেই রাজশাহীর ক্রিকেট যেন নতুন দিগন্তের সূচনা লাভ করে। তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় রাজশাহীতে একটি ক্রিকেট প্রশিক্ষণ একাডেমিও গড়ে উঠেছে।

 

যেখান থেকে প্রতি বছরই ক্রিকেটার বের হচ্ছে। এছাড়াও রাজশাহীর কাটাখালিতে গড়ে উঠেছে বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমি নামের আরেকটি প্রশিক্ষণ একাডেমি। এটিও রাজশাহীর ক্রিকেটারদের জন্য এক বড় পাওয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামের একটি অংশ জুড়ে ক্লেমন ক্রিকেট প্রশিক্ষণ একাডেমি গড়ে তুলেছেন দেশবরেণ্য এই ক্রিকেটার। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্য াপর্যন্ত চলে এখানে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ। ফলে শতাধিক ক্রিকেটারদের পদচারণায় এই স্টেডিয়ামটি এখন সারা বছরই প্রাণবন্ত হয়ে থাকে।

 

অথচ বছর কয়েক আগেও যখন স্টেডিয়ামটিতে খেলা থাকত না, তখন যেন এক ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হতো। স্টেডিয়ামের বাইরের ঘাস ও জঙ্গলগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠত অবলিলায়। কিন্তু এখন আর সেই পরিবেশ থাকে না। সারা বছরই স্টেডিয়ামটিও থাকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। এই ক্রেকেট একাডেমি প্রতি বছর ভালো ভালো ক্রিকেটার বের হয়ে আসছে।

 

এর বাইরে আছে রাজশাহী নগরীর অদূরে কাটাখালি এলাকায় অবস্থিত আব্দুল মোক্তাদির পরিচালিত বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমি, রাজশাহী কলেজে জামিলুর রহমান সাদ পরিচালিত যুব ক্রিকেট স্কুল এবং কোর্ট এলাকায় মামুনাল আলম জেড পরিচালিত কিশোর ফুটবল একাডেমী।
বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমির যুব ক্রিকেট একাডেমিতে বর্তমানে ১২০ জন ক্রিকেটার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

 

এই ক্রিকেট একাডেমীর উজ্জলমুখ ইমরুল কায়েস, ফরহাদ হোসেন এবং সাকলায়েন সজিব। এর বাইরে নয়জন খেলোয়াড় খেলেছেন জাতীয় লীগে এবং ৩৫ জন খেলোয়াড় খেলছেন ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে।

 

মাত্র ছয় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কিশোর ফুটবল একাডেমি থেকে বর্তমানে অর্ন্দ্ধু-১৮ দলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হয়ে দুইজন (মোরছালিন ও বিপু), টিম বিজিএমসিতে আছে তিনজন (গোলকিপার বিশাল, সেক্টর এবং সিজার) এবং ব্রাদারার্স ইউনিয়নে হয়ে খেলছে একজন (বাদল)।

 

যত ক্লাব:
২০১৪ সালের তৃতীয় বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট টূর্নামেন্টের সেমিফাইনালের ঘটনার কথা এখনো রাজশাহীর দুটি ক্লাবকে আলোড়িত করে। ওই ম্যাচে বৈকালী সংঘ ৫০ ওভারের খেলায় মাত্র ১৬০ রানে গুটিয়ে যায়। প্রতিপক্ষ নর্থবেঙ্গল ক্রিকেট একাডেমি দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ১০০ রান করে ফেলে।

 

এরপর ফলে নর্থ বেঙ্গলের জয়টা কেবলই হাতছানি দিচ্ছিল। কিন্তু কে জানে এই ম্যাচটি তখনো নাটকিয়তায় ভরপুর হয়ে আছে। আর ঠিক ওই মুহূর্তেই বৈকালি সংঘের বাম হাতি স্পেনার নির্ঝর এক ওভারেই চার চারটি উকেট তুলে নিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে আনলেন। শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচটি ২০ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে ফাইনালে ওঠে বৈকালি সংঘ। শুধু এই একটি ম্যাচই নয়, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি থেকে শুরু করে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত কয়েক ডজন খেলার প্রায় প্রতিটি টূর্নামেন্টেই টানটান উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি হয় ক্লাবগুলোর মধ্যে।

 

খেলোয়াড় তৈরীর কারিগর এই ক্লাবগুলো হলো, দিগন্ত প্রসারী সংঘ, বৈকালী সংঘ, শিরোইল স্পোর্টিং ক্লাব, সিপাইপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব, উপশহর স্পোর্টিং ক্লাব, আবাহনী ক্রীড়া চক্র, রাজশাহী উল্লেখযোগ্য।

 

স/মি