দাম নিয়ে সংশয়ে কৃষক: রাজশাহীতে ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে বেড়েছে পাটের চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


উঠছে পাট। শুরুতেই দাম নিয়ে সংশয়ে কৃষকরা। কারণ সরকারের পাটকলগুলো বন্ধ। তাই পাট বিক্রি নিয়ে বেকায় পড়তে হতে পারে এমন দুশ্চিন্তা রয়েছে কৃষকদের মাঝে। তার উপরে রাজশাহীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। আর গত বছরের তুলনায় ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে বলে কৃষি অধিদফতর জানায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানায়, রাজশাহী জেলায় এবছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ২৬ হেক্টর বেড়ে চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। আর গত বছর ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছিল।

তিনি জানান, পাটের চাষ প্রতিবছরই বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় ৯৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে রাজশাহী জেলায়। দাম ভালো পাওয়ায় পাচ চাষে ঝুকছে কৃষক বলে এই কর্মকর্তা জানান।

জানা গেছে, গেলো কয়েক বছর পাটের ফলন ও দাম ভালো ছিলো। তাই লাভের মুখ দেখতে এবছর আবাদের পরিমাণও বাড়িয়েছিল কৃষক। আশানুরূপ বৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে পাট কাটা, জাগ দেওয়ায় কোন সমস্য নেই। তবে এখনও বাজারে কৃষকের পাট আসতে শুরু করেনি। এরি মধ্যে দাম নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা।

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা হাটের পাইকারি ক্রেতা শফিফুল ইসলাম জানান, পাট এখনো বাজারে উঠতে শুরু করেনি। পাট উঠলে বোঝা যাবে দাম কেমন হবে। সরকারী পাটকলগুলো বন্ধ, তবে পাটের দাম বলা যাচ্ছে কেমন হবে। যদি বেসরকারি পাটকলগুলো সিন্ডিটেক করে পাটের দাম কমায়, তাহলে বেকায়দায় পড়ে যাবে কৃষকরা। এদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।

পবার দুয়ারির কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে হাল চাষ, সার, বিজ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়ায় হাজার টাকা। কমপক্ষে ৩ বার জমিতে নিড়ানি দিতে ১৫ জন মজুরকে দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। পাট কাটতে আরও ২ হাজার টাকা ও ধুতে লাগছে ২ হাজার টাকা। তার পরে এবার সরকারের পাটকলগুলো বন্ধ। পাট কিনবে কারা?

আরিফুল ইসলাম নামের আরেক কৃষক জানায়, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে একজন কৃষকের ব্যয় হয় ৯ হতে ১০ হাজার টাকা। অথচ একবিঘা জমিতে বড়জোর পাট পাওয়া যায় ৮ মণ। এবার কত টাকা দরে বিক্রি হবে পাট এমন দুশ্চিনায় রয়েছেন তারা।
অন্যদিকে, দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় চাষিদের পাট নিয়ে এবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। বৃষ্টির কারণে কাটা ও জাগ দেওয়ারও সমস্যা নেই। তবে এভাবে বৃষ্টি হলে পাট শুকানো নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে কৃষককে।

পবা উপজেলার বড়গাছি গ্রামের পাট চাষি ইমরান আলী জানান, এবার ৭ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। বর্তমানে পাট কাটা শুরু করেছেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক (ডিডি) শামসুল হক আরও জানান, পাটের দাম ভালো থাকায়, কয়েক বছর থেকে পাটের আবাদ বেড়েছে। এক কথার উত্তরে তিনি জানান, সরকারি পাটকল বন্ধ। তবুও পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। কারণ বে-সরকারি পাট কলগুলো রয়েছে। এছাড়া বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদা। কৃষকদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই।

স/আ