রাজশাহীতে ৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটকের রহস্য উদঘাটন, ধরা খেলেন মামলাকারী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ছিল মাত্র ৮৩ টাকা। অথচ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর ছয় লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে তিনি থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হন।

রাজশাহী মহানগরীতে ৬ লাখ টাকা ছিনতাই এর নাটক সাজান নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) নামে এক ব্যক্তি। তিনি নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ভদ্রা জামালপুর গ্রামের মৃত হাবিব উদ্দিন এর ছেলে।

জানা গেছে, নূরে হাবিব ডুজন বোয়ালিয়া মডেল থানায় অভিযোগ করেন যে, সোমবার (১১ জানুয়ারি)বিকেল ৩টা ১০ এ প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, আলুপট্টি শাখা, রাজশাহী হতে তার ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে ৬ লক্ষ উত্তোলন করেন। টাকা উত্তোলন করে একটি শপিং ব্যাগের ভিতরে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় সোয়া ৩ টায় রাজশাহী কুমারপাড়াস্থ এস.এ পরিবহণের সামনে দিয়ে ডিজিএফআই অফিসের পার্শ্বে পৌঁছালে রাণীবাজারের দিক থেকে একটি কালো কালারের মোটর সাইকেলে ২ জন ব্যক্তি মাথায় হেলমেট পরিহিত অবস্থায় এসে মোটর সাইকেলে ধাক্কা দিয়ে তার নিকটে থাকা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে আলুপট্টির দিকে চলে যায়। তার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।

মামলাটি রুজুর পরে বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মনের নেতেৃত্বে তদন্তকারী অফিসার এসআই গোলাম মোস্তফাসহ বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশ টিম তদন্ত শুরু করেন।

প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড আলুপট্টি শাখা, রাজশাহীর সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ও নূরে হাবিব ডুজনের একাউন্ট এর স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, বাদীর একাউন্ট-এ মাত্র ৮৩  টাকা আছে এবং সে ব্যাংক থেকে ১১ জানুয়ারি  কোন টাকা উত্তোলন করেননি। এবং পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজেও ব্যাংকে তার অবস্থানের কোন তথ্যচিত্র নাই।

পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে  ডুজন  ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং লিখিতভাবে জানায়, তার বড় ভাই মো: রওশন আলী (আমেরিকা প্রবাসী) এর ডিপিএস থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে তিনি খরচ করে দিয়েছেন। প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, শ্যামলী শাখা, ঢাকায় তার ডিপিএস ছিল। ডিপিএস থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা উত্তোলন করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৬ লাখ টাকা কেটে নিয়ে অবশিষ্ট টাকা তাকে প্রদান করে। নূরের ভাইয়ের টাকা তাকে না জানিয়ে খরচ করে দেয়ায় তিনি এ  টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার নাটক সাজান। প্রকৃতপক্ষে তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড ব্যাংক থেকে কোন টাকা উত্তোলন করেনি।

এদিকে, মামলাটির তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের সংগে নূরে হাবিব ডুজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করায় পেনাল কোড ১৮২ ধারায় প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

 স/জে/অ