রাজশাহীতে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরীতে এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার (০৫ আগস্ট) নগরীর দাশপকুর ডিসির মোড় এলাকায় নিহত প্রবাসীর স্ত্রীর ভাড়া বাসার প্রধান ফটকের সামনে থেকে রাজপাড়া থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।

স্বামী হারুন অর রশিদ নামে সৌদি প্রবাসীর নিহত স্ত্রীর নাম রুপালি খাতুন (২৫)। সৌদি প্রবাসী হারুন নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার মির্জাপুর ভাবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা। আর নিহত রুপালি খাতুনের বাড়ী রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার বাজিয়াকোলা গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রুপালি খাতুন দাশপকুর ডিসির মোড় এলাকায় মোসাদ্দেকুর রহমানের বাসায় দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন। তার কোন সন্তান না থাকায় সে একাই বসবাস করতো। শুক্রবার সকালে বাড়ির মালিকের বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ফজরের নামাজের জন্য ওযু করতে গেলে বাড়ির গেটের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে বাড়ির অন্য সদস্যদের খবর দিলে জানাজানি হয়। পরে বাড়ির মালিকের স্ত্রী লাভলী বেগম রাজপাড়া থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

বাড়ির মালিকের স্ত্রী লাভলী বেগম বলেন, ‘বড় ছেলে ফজরের সময় নামাজের জন্য ওযু করতে গেলে সিঁড়ির নিচে গেটের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় রুপালির মরদেহ থাকতে দেখে বিষয়টি আমাদেরকে জানায়। পওে বিবস্ত্র মরদেহটি ওড়না দিয়ে ঢেকে দিয়ে পুলিশকে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘রুপালির স্বামী বিদেশে থাকায় মোবাইলে কথা বলতো। আমার বাসায় বাইরের কেউ যাওয়া-আসা করতো না। তবে স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হতো। হয়তো স্বামীর সাথেই ঝগড়া করে ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনতলা থেকে পড়ে মারা গেছে।’

তবে নিহত রুপালি খাতুনের ভাই রফিক অভিযোগ করে বলেন, ‘ভগ্নিপতি হারুন দীর্ঘদিন থেকে বিদেশে থাকে। আমার বোনের সাথে ঝগড়া-ঝাটি চলে আসছিলো। আমার বোন হারুনের দ্বিতীয় স্ত্রী। তাকে নিয়ে সংসার করবে না বলে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতো। এখানে তার শ্যালকরা (প্রথম স্ত্রীর ভাই) থাকে এবং প্রথম স্ত্রীও এই হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে। তাকে পরিকল্পিতভাবে মারা হয়েছে। সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করছি।’

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাছিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, বাড়ির তিনতলা থেকে পড়ে মারা গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত প্রবাসীর স্ত্রী পড়ে গিয়ে নাকি তাকে কেউ হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে চলে গেছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যাবে।’ তদন্তের স্বার্থে বাড়ির মালিকের তিন ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় রাখা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এএইচ/এস