বুধবার , ৬ জুলাই ২০১৬ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে সক্রিয় পকেটমার-ছিনতাইকারী, মলম ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা

Paris
জুলাই ৬, ২০১৬ ১০:১১ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদ,পালা-পর্বণ অথবা যেকোনো উৎসব এলে বেড়ে যায় ছিনতাইকারী, পকেটমার, অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যদের দৌরাত্ব। এবছরও ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরমুখো ও কেনাকাটা করা মানুষকে নিঃস্ব করার জন্য ওঁৎ পেতে রয়েছে তারা।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজশাহীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পকেটমার, ছিনতাইকারী, অজ্ঞান ও মলম পার্টির কয়েকটি চক্র। বর্তমানে নগরীতে মোট কয়টি চক্র কাজ করছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান দিতে না পারলেও চক্রগুলোর তৎপরতার কথা স্বীকার করে পুলিশ বলছে, তাদের হাত থেকে বাঁচতে মানুষের সচেতনার বিকল্প নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘ঈদ চলে আসলেই সক্রিয় হয়ে উঠে পকেটমার, ছিনতাইকারী, অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা। এবারের ঈদকে সামনে রেখে তারা উৎপর হয়ে উঠেছে। তাদের ঠেকাতে পুলিশ খুবই সর্তক অবস্থানে রয়েছে।’
‘অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টির সদস্যদের হাত থেকে বাঁচতে মানুষকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। মানুষের সচেতনার বিকল্প নেই। অন্যের দেওয়া যেকোনো খাবার খাওয়া যাবে না।’ বলেন ইফতেখায়ের আলম।
সিল্কসিটি নিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহী নগরীতে আবারো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি চক্রের ছিনতাইকারী, পকেটমার, অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষ্যে কেনাকাটা করা ও ঘরমুখো মানুষকে নিঃস্ব করার জন্য ওঁৎ পেতে আছে তারা। অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা সাধারণত চার থেকে পাঁচজন মিলে একটি টিম হয়ে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ুগত ১ জুলাই রাজশাহীতে মলম পার্টি খপ্পড়ে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় নির্মাণ শ্রমিক। ঈদে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে মলম পার্টির খপ্পড়ে পড়েন তারা। ১ জুলাই গভীর রাতে অজ্ঞান অবস্থায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, শুক্রবার রাতে ওই ছয় নির্মাণ শ্রমিক ঢাকা থেকে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তারা ওই ট্রাকে মলম পার্টির খপ্পড়ে পড়েন। মলম পার্টির সদস্যরা তাদের কাছ থেকে টাকা  ও মোবাইলসহ সর্বস্ব লুট কওে নেয়। পরে রাজশাহী মহানগরীর বহরমপুর এলাকায় রাস্তার ধারে তাদের নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নগরীতে শ্রমজীবী মানুষের সরলতা এবং অজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নগদ অর্থ, মোবাইলসহ সর্বস্ব হাতিয়ে নেয় চক্রটিগুলো। মাকের্ট ও শপিং মলগুলোতে পকেটমার, ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টির সদস্যরা সক্রিয়।
রেলে সক্রিয় অজ্ঞান পার্টি: পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদ মৌসুমে রেলপথের যাত্রীরা পকেটমার, মুঠোফোন চোর, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টি এ চার ধরনের অপরাধী চক্রের শিকার হন। ইতোমধ্যে সক্রিয় হচ্ছে অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টি। অজ্ঞান পার্টির প্রধান লক্ষ্য মেইল ও লোকাল ট্রেনের শ্রমজীবী মানুষ। উত্তরাঞ্চল  থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলোতে অজ্ঞান পার্টিও দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। যাত্রীদের অচেতন করার উপকরণ হিসেবে তারা চা, পান, সিগারেট, চানাচুর, রুমাল বা কাপড় ব্যবহার করে। এ ছাড়া তারা চেতনানাশক ওষুধও ব্যবহার করে থাকে, যা নাকের সামনে ধরলেই যাত্রীরা অচেতন হয়ে পড়েন।
ট্রেনের হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বোচ্চ চারজন নিয়ে একেকটি চক্র গড়ে ওঠে। তাদের একজনের কাজ যাত্রী নির্বাচন। আরেকজন অচেতন করে লুট করার কাজটি করে। দু’জন থাকে ঘটনাস্থলের আশেপাশেই। ওই দুই সদস্যের দায়িত্ব হলো অচেতন করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে যাত্রী সেজে সহকর্মীকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি  থেকে উদ্ধার করা।
চিকিৎসকদের সূত্র থেকে জানা যায়, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাবারের সাথে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ‘ডায়াজিপিন’ ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ যাত্রীদের সেবন করিয়ে অচেতন করেন। এসব ওষুধ ডায়াবেটিস ও লিভারে সমস্যাহগ্রস্ত রোগীদের জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান সিল্কসিটি নিউজকে জানান, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের চেতনানাশক ওষুধ একসাথে মিশিয়ে ককটেল টাইপের কিছু একটা তৈরি করে। তারপর সেগুলো ব্যক্তিভেদে নানা ধরনের খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ায়। একজন সুস্থ্য মানুষকে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে অচেতন করলে সেই মানুষটির কোনো ক্ষতি হয় না। কিন্তু যাদের ফুঁসফুঁস, কিডনি ও লিভারের সমস্যা আছে, তাদের ফুঁসফুঁস, কিডনি ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়।

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর