রাজশাহীতে শীর্ষ কর্মকর্তাদের কর্মে স্থবির বিএমডিএ

শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। প্রকল্প অনুমোদন হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে না মাঠপর্যায়ে। কমেছে আগের নেওয়া প্রকল্পগুলোর গতি। তিন শীর্ষ কর্মকর্তা অফিস না করায় এমন হাল, অভিযোগ অন্য কর্মকর্তাদের।

বিএমডিএ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির কোনো গঠনকাঠামো (অর্গানোগ্রাম) নেই। নিয়ম অনুযায়ী তিন মাস পরপর বোর্ডসভা হওয়ার কথা। অথচ সাড়ে তিন বছরেও কোনো সভা হয়নি। প্রকৌশলীদের মধ্যে বিভক্তি, কর্মচারী ইউনিয়ন নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বিষয়ে আদালতে একাধিক মামলা, কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, বিপুল অঙ্কের টাকার অডিট আপত্তি, অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিতে ধীরগতি, প্রাপ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ও উচ্চতর স্কেল প্রদান, ইতিপূর্বে দরপত্র ছাড়াই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোটি কোটি টাকার কোটেশন দেওয়া, সিন্ডিকেটের আধিপত্য ইত্যাদি কারণে বিএমডিএর উন্নয়নকাজের গতি মন্থর হয়ে পড়েছে।

এদিকে বিএমডিএর তিন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন চেয়ারম্যান ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শ্যাম কিশোর রায় ও সচিব সুমন্ত কুমার বসাক। এতে প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কার্যক্রমে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানিয়েছেন। অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

সূত্র জানান, বিএমডিএর চেয়ারম্যান চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিন দিনও অফিস করেননি। তিনি বেশির ভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন। শ্যাম কিশোর রায় চলতি বছরের শুরুতে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক পদে যোগ দেন। তিনি মাসখানেক নিয়মিত অফিস করেন। এর পর থেকে বাসায় বসেই দাফতরিক কাজ করেন। তিনি বাসায় বসে অফিস করায় দাফতরিক কাজের ফাইল অনুমোদনে দীর্ঘ সময় লাগছে। এ ছাড়া অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন সুবিধা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সচিব সুমন্ত কুমার বসাক গত ৮ মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ থেকে সাত দিন অফিস করেছেন বলে জানা গেছে। দাফতরিক কিছু কাজ তিনি বাসায় থেকেই করেন। তবে নিয়মিত অফিস না করায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছেন। এ বছরের জানুয়ারির শুরুতে শ্যাম কিশোর রায় নতুন নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিএমডিএতে গতি ফিরবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিএমডিএর চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক শ্যাম কিশোর রায় ও সচিব সুমন্ত কুমার বসাককে একাধিকবার ফোন করলেও তারা রিসিভ করেননি। অফিসে গিয়েও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। তাদের প্রত্যেকের নম্বরে মেসেজ পাঠানো হলেও কোনো সাড়া দেননি।

স/রা