রাজশাহীতে মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশ


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। আর গেিবর পাতে তো দেখাই পড়ছেই না ইলিশ। অথচ এক সময় বর্ষায় ইলিশ ধনি-গরিব সবার পাতেই চড়ত বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর অনেকেই। রাজশাহীর বাজারে গতকাল সোমবার প্রতিকেজি ইলিশ সাইজ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে আটশ’ থেকে ১৮শ’ টাকা দরে। এ বছর শুরু থেকেই প্রায় একই দামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এ বছর মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে অবস্থান করছে ইলিশ।

রাজশাহীর ইলিশের আড়ৎ হলো নগরীর নিউমার্কেট এলাকায়। এখানে প্রতিদিন ভোরে পিকআপ ভ্যানে বা বাসের লাগেজ বাক্সে আসে ইলিশ। এর পর সকাল থেকেই শুরু হয় পাইকারী দরে ইলিশ বেচা-কেনা। গতকাল এ বাজারে পাইকারী প্রতিকেজি ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি সাইজের ইলিশগুলো বিক্রি হয়েছে ১২-১৩শ টাকা দরে। দেড় কেজি সাইজের ইলিশ গতকাল তেমন আসেনি বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তার পরেও যেগুলো এসেছে, সেগুলো বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৬-১৮শ টাকা কেজি দরে।

এ আড়তের পাশেই খুচরা ইলিশ বিক্রি করেন আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু ইলিশের তেমন আমদানী নাই। এ কারণে এবার ইলিশের দাম শুরু থেকেই চড়া। বাজারে যারা ইলিশ কিনতে আসেন, তাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন। তারাই সাধারণত ইলিশ কেনেন। মধ্যবিত্ত অল্প পরিমাণে ক্রেতা আসলেও তাঁদের চাহিদা থাকে ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দিকে।’

আরেক ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘এক কেজি বা তার ওপরে হলেই ইলিশের দাম প্রায় দ্বিগুন থাকছে এবার। আবার ছোট আকারের ইলিশের তেমন সাদ থাকে না বলে মধ্যবিত্তরা সেটিও নিতে চান না। ফলে বাজারে ইলিশের ক্রেতা ধনি লোকজন।’
এ বাজারে ইলিশ কিনতে আসা আজাহার আলী বলেন, ‘গত প্রায় এক মাস ধরে ভ্যাবছি ইলিশ কিনব। কিন্তু দাম তো কইমছে না। তাই কিনতে আশার সাহস পাইনি। আজ বাড়িতে লোকজন আসবে, তাই ইলিশ কিনতে অ্যাসেছি। দেখি দাম আরও বেশি। তার পরেও ৭০০-৮০০ গ্রামের একটা ইলিশ কিনলাম। বছরে এই প্রথম ইলিশ খাওয়া হবে।’

আজাহার উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক, তাদের এখুন অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতেই হিমশিম খ্যাতে হচ্ছে। এতো টাকা দিয়ে ইলিশ কিনবো কী করে।’

আরেক ক্রেতা নাজিবুল ইসলাম উদ্দিন। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। ইলিশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের বাড়ির সবারই পছন্দ ইলিশ। কিন্তু এবার দাম চড়ার কারণে বেশি কিনতে পারিনি। তার পরেও তিন-চার দিন কিনেছি। আজ আবার এসেছি দুইটা ইলিশ কিনতে। এক কেজি সাইজের ইলিশগুলো কিছুটা পছন্দ হলেও দাম চড়া।’

এদিকে রাজশাহীর প্রবীণ ব্যক্তি সাংবাদিক আনসার আলী বলেন, ‘১৫-২০ বছর আগেও বর্ষায় ঢ়নি-গরিব সবার পাইে উঠতো ইলিশ। এখন গরিবেরা আর ইলিশ কিনতে পারে বলে মনে হয় না। এই উর্দ্ধগতির বাজারে মানুষ ভাত-তরকারি কাবে না ইলিশ খাবে?

স/আর