রাজশাহীতে তৃতীয় লিঙ্গের জনগণের উন্নয়নের অন্তরায় হিজড়া গুরু- আরএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ও মূলধারার সাথে যুক্ত করতে হলে একটি কাঠামো ও শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। সেইসাথে প্রথমে হিজড়া গুরু প্রথা বন্ধ করতে হবে। কারণ গুরুরা সাধারণ তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের মারাত্বকভাবে নির্যাতন করে। দিন শেষে গুরুর দেয়া নির্ধারিত টাকা না দিতে পারলে খাওয়া-;দাওয়া বন্ধসহ মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। এই পেশা থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইলে গুরুরা তা মেনে নেয় না বলে জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। বিগত সময়ে তিনি ঢাকাতে বেশ কয়েকজন তৃতীয় লিঙ্গের সদ্যসর সাথে কথা বলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হন। সোমবার দিনের আলো হিজড়া সংঘের আায়োজনে কমিশরার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সকল কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে বসবাসরত ১২০০জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে এক প্লাটফরমে নিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে ডাটা কালেকশন করার পরামর্শ দেন তিনি। প্রধান অতিথি বলেন, শুধু চাকরী নয় নিজে উদ্যোক্তা হতে হবে। তিনি এবং আরেকজন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিলে তাদের কর্মসংস্থানের জন্য রাজশাহীতে জন্য একটি বুটিক হাউজ করে দিচ্ছেন। আগামীতে এখানে অনেক তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। নিজেদের উন্নয়নে নিজেদের এগিয়ে আসতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আগামীতে আরো কুটির শিল্প ও ছোট আকারে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী করার কথা বলেন তিনি। সেইসাথে এই জনগোষ্ঠির সন্তানেরা যেন পরিবার থেকে বেড়িয়ে না আসতে হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। কোন পরিস্থিতিতে বেড়িয়ে আসলেও তারা যেন কোন গুরুর খপ্পরে না পড়ে সেদিকে নজর রাখার জন্য অত্র সংঘের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে লেখাপাড়া শিখে প্রকৃত মানুষ হয়ে নিজের এবং দেশের উন্নয়নের কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা-এর অক্লান্ত পরিশ্রম ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে সুসম্পর্ক থাকায় তৃতীয় নিঙ্গের জনগণ অনেক সুশৃংখল হয়েছে। এখন তারা মানুষের নিকট হতে জোর করে তেমন আর টাকা উত্তোলন করে না। কোথাও এমন ঘটনা ঘটলে আর খবর পেলে মোহনাকে বললে দ্রুত এর সমাধান হচ্ছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে তাঁর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন আর এমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। সেইসাথে আগামীতে দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বড় আকারে আরেকটি সভা আয়োজন করার পরামর্শ দেন তিনি।

আরএমপি পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মজিদ আলী বিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) সাজিদ হোসেন, ডিসি সদর রফিকুল হাসান, ডিসি ডিবি আরেফিন জুয়েল, ডিসি এনডি রাকিবুল রাকিব, এডিসি গোলাম রুহুল কুদ্দুস, দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা শ্যামল কুমার ঘোষ ও সেকেন্দার আলী, পুলিশ পদির্শক মোহতারেমা আশরাফী খানম ও জিল্লুর নহমান। এছাড়াও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা ও তৃতীয় লিঙ্গের অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

জি/আর