রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা শাহিন শাহ হত্যা মামলার রায় আগামীকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী শাহীন আলম ওরফে শাহিন শাহ (৪২) হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি)। ২০১৩ সাল থেকে মামলাটি বিচারাধীন থাকার পর রাজশাহী মহানগর আদালতে ১৪ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণা বলে জানা গেছে।
এরআগে, বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর ২০২০) রায় ঘোষণার দিন ছিলো। তবে সেদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওএইচএম ইলিয়াস হোসাইন রায়ের নতুন তারিখ ধার্য করেন ১৪ জানুয়ারি।
এদিকে, রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির যুক্তিতর্ক চলছে। দীর্ঘ সময় পর মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আসামিদের শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা করছেন নিহত শাহিন শাহর পরিবারের সদস্যরা।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, নগরীর গুড়িপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর দুপুরে সাবেক ছাত্রলীগ
নেতা ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী শাহীন আলম ওরফে শাহেন শাহকে কুপিয়ে হত্যা করেন মাদক ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আক্তার নাহান।
এরপর মামলার প্রধান আসামী তৎকালীন এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মুনসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তের পর ৩১ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহীন আলম হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৮ জনের সাক্ষগ্রহণ করেন আদালত। এছাড়া আসামিদের পক্ষে চারজনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১০ ডিসেম্বর মামলার রায় ঘোষণা দিন ধার্য করেন আদালত। সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে গুড়িপাড়া এলাকার মুনসুর রহমান, হিমেল, চাঁন্দ, বিপ্লব, রজব, রংলাল, রাজাসহ বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাহীন আলমের ওপর হামলা চালায়। তবে মামলায় তাদের নাম উল্লেখ থাকলেও মুনসুর ছাড়া বাকি কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে মামলার বাদিসহ নিহতের পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন।
নিহতের স্ত্রী শামলী খাতুন বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। বাকিটা আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছি।
এ বিষয়ে মামলার বাদি মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আক্তার নাহান বলেন, আমরা মামলার রায়ে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। যদিও আসামীরা বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়েছেন। এছাড়া আমাদেরকে ন্যায়বিচার বঞ্চিত করতে কালক্ষেপন করা হয়েছে। এমনকি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল থেকে মহানগর আদালতে নেয়া হয়েছে। তবুও আমার ভাইয়ের খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক  জানান, মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন। তারা তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষীদের মাধ্যমে আদালতে হত্যার বিষয়টি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যাপারে আশাবাদি তারা।