রাজশাহীতে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর তানোর পৌর ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়; তার বিরুদ্ধে নারীকে ধর্ষণ, পরে পরকীয়া প্রেম করে বিয়ে, সংসার এবং সবই অস্বীকার করারও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী নারী আদালতে মামলা করেছেন। বর্তমানে রাজশাহীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করছে।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম শাহীন সরকার রঞ্জু। তিনি রাজশাহীর তানোর পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। ভুক্তভোগী নারী রবিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে শাহীন সরকারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে ধরার পাশাপাশি তাঁর বিচার দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, স্বামী আর দুই সন্তানের সাথে তিনি তানোর পৌর এলাকায় শাহীন সরকারের বাড়ির পাশে ভাড়া থাকতেন। শাহীন তাঁকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। তিনি এড়িয়ে যেতেন। বছর খানেক আগে একদিন ফাঁকা বাড়িতে কৌশলে ডেকে ধর্ষণ করেন শাহীন সরকার। লোকলজ্জায় তিনি বিষয়টি কাউকে বলতে পারেননি। এই ঘটনার পর শাহীন তাঁর সঙ্গে মোবাইলে সব সময় যোগাযোগ করতেন। একপর্যায়ে তাঁদের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এরই মধ্যে একদিন ওই নারীর স্বামী শাহীন সরকারের সাথে কথা বলতে দেখে তাঁকে মারধর করেন। শাহীন সরকার তখন ওই নারীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। বাধ্য করেন স্বামীকে তালাক দিতে। এরপর তিনি ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে রাত কাটাতেন। কিছুদিনের মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হন ওই নারী। তারপরও তিনি বিয়ে করছিলেন না। ওই নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলেও নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছিলেন শাহীন।

গত জুনে ওই নারীর জ্বর হয়। তখন জ্বরের চিকিৎসার নামে বাড়িতে একজন গ্রাম্য চিকিৎসক নিয়ে যান শাহীন। ওই চিকিৎসক তাঁকে ভ্রুণ নষ্ট করার ওষুধ দেন। পরবর্তীতে বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। তবে এর আগেই আদালতে গিয়ে এফিডেফিটের মাধ্যমে ওই নারীকে বিয়ে করেন শাহীন সরকার। কিন্তু বিয়ের রেজিস্ট্রি করেননি।

ওই নারী জানান, বিয়ের পর পৌর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে তাঁকে নিয়ে ওঠেন শাহীন সরকার। দুই মাস সংসার করার পর তিনি বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য শাহীনকে চাপ দেন। তখন শাহীন বলেন, এখন লকডাউন চলছে। রেজিস্ট্রি হবে না। লকডাউন শেষে ওই নারী আবার চাপ দিলে বিয়ের কথায় অস্বীকার করেন শাহীন। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন ওই নারীকে। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে মামলা করেন।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘শাহীন সরকার আমার সংসার ভেঙেছে। আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। আমার বাচ্চা নষ্ট করেছে। আমি তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদল নেতা শাহীন সরকার রঞ্জু বলেন, ‘সব মিথ্যা ভাই। আমি একটা ভালো ছেলে। আমাকে ফাঁসিয়েছে। বিয়ের যে এফিডেফিট দেখাচ্ছে সেটাও ভুয়া।’

জেএ/এফ