রাজশাহীতে চায়ের দোকান, নাকি মৃত্যুকূপ?

আব্দুল্লাহ আল মারুফ

করোনাভাইরাস এর বিস্তার রোধে সাত দফায় ঘোষিত দীর্ঘ ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির পর ৩১ মে রবিবার খুলে দেয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। জীবন বাঁচাতে জীবিকা কে প্রাধান্য দিয়ে সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হয়েছে ছোট-বড় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। ফলে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন।

আর জনজীবন স্বাভাবিক হবার সাথে সাথে জমে উঠেছে পাড়ামহল্লার চায়ের দোকানগুলো। যেখানে দু’একটি দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা গেলেও অধিকাংশ দোকানেই নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দের আশঙ্কা, এর ফলে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।

রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন চায়ের দোকান গুলোতে ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওয়ান টাইম গ্লাস ও কাপ ব্যবহার করা হলেও অধিকাংশ দোকানেই একই কাঁচের গ্লাস ও কাপে পরিবেশিত হচ্ছে পানি ও চা। কিছু কিছু দোকানে কয়েকজন একসঙ্গে বসে চা পান করার পাশাপাশি পান সিগারেট নিয়ে দিচ্ছেন আড্ডা। করোনা প্রতিরোধে সরকার যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছে, সেটাও মানছেন না তারা।

চা পান করতে আসা সাধারণ মানুষরা বলছেন, বাড়িতে চা তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই, তাছাড়া সারাদিন ঘরে থাকতেও ভাল লাগেনা, তাই অল্প কিছু সময়ের জন্য এসেছি চা খেতে, এখনই চলে যাব, এতে তেমন কিছু হবে না।’

তবে চা পান করতে আসা মানুষদের মধ্যে অধিকাংশই নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। যারা জীবিকার তাগিদে বের হয়েছেন রাস্তায়।

রিকশাচালক আনোয়ার জানান, রোদে রিক্সা চালাতে চালাতে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ি, তৃষ্ণা নিবারণের জন্যই মূলত চায়ের দোকানে আসা।

তবে এসব নিয়ে জানতে চাইলে অধিকাংশ দোকানিরা জানান, জীবনের তাগিদেই দোকান খুলতে হয়, না হলে না খেয়ে মরতে হবে। টুকটাক যা বেচাকেনা হয় তা দিয়ে চলে সংসার।’ তবে স্বাস্থ্যবিধি কেন মানছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এসব স্থানের অধিকাংশ মানুষ।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা নামো ভদ্রার জামাল জানান, ‘এটি অনেক ছোঁয়াচে একটি রোগ, তাই সরকারের সকল নির্দেশনা মেনে দোকান খুলেছি, নিজে সবসময় নিরাপদ থাকার পাশাপাশি সকলকে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করছি। ওয়ানটাইম কাপে চা বিক্রি করলেও চায়ের দাম বাড়ায়নি। ফলে প্রতি কাপে এক টাকা লাভ কম হলেও মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছি না এটাই বড় সান্তনা বলেও তিনি জানান।

স/অ