রাজশাহীতে চার বছরে ৫ খুনের নেপথ্যে অটোরিক্সা চুরি

শাহিনুল আশিক:

অটোরিক্সা চুরি বা ছিনতাই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটছে হত্যাকাণ্ড। এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ছাড়াও উদ্ধার হচ্ছে অটোরিক্সাও। পুলিশ বলছে- অটোরিক্সা চালকদের সচেতন হতে হবে। গভীর রাতে নির্জন বা দূরে ভাড়া নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া গ্যারেজ ও আশে-পাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের দুই নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৫টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অনন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার ছাড়াও বেশকিছু অটোরিক্সাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। পৃথক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো অটোরিক্সা চুরি বা ছিনতাইয়ের জন্যই হয়েছে বলে গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করে। (রাজশাহীর স্থানীয় ও জাতীয় অনলাইন থেকে তথ্য নেওয়া)

চলতি মাসের গত ২৯ আগস্ট নগরীর নওদাপাড়ায় অটোরিক্সা চুরির সময় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের শিকার হন- নৈশপ্রহরী আনিসুর রহমান ওরফে নারা (৭০)। পুলিশ মৃত আনিসুরের হাত, পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে শ্বাসরোধে বিষয়টি। ঘটনা পরে শাহমখদুম থানা পুলিশ ও পিবিআই চারজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- মাহাফুজ মোল্লা (৪৯), আকিজার মোল্লা (৩৩), আবুল হোসেন (৫০), রুমন আলী (২৪)। পুলিশ জানায়- হত্যকারীরা পেশা ছিল চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি।

অন্যদিকে, অটোরিক্সা চুরির জন্য চালক শমসেরকে (৩০) হত্যা করা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটলেও গোদাগাড়ী থেকে ১ মার্চ শমসেরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শমসের নিখোঁজ হওয়ার পরদিন তার বাবা থানায় অভিযোগ করেন, সাগর (২৫), সাগর (২২), সোহেল (২৩) ও আব্দুর রাজ্জাক (৪২) নামে চারজনের বিরুদ্ধে। পরে সাগর ও রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি গোদাগাড়ীতে অটোচালকের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত জসিম উদ্দীন জয় (২২) নগরীর বড় বনগ্রাম মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা। এ ঘটনার সাথে জড়িত দু’জন সুমন (২৩) ও জসিমকে (২২) গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার নাম আসে রাজিবের বিরুদ্ধে।

গত ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর রাতে চারঘাটের নন্দনগাছির আখক্ষেত থেকে ভ্যান চালক রাজুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় আল মাহমুদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়া ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর অটোরিক্সা চালক শরীফুল ইসলাম মুন্নাকে (৪২) হত্যা করা হয়। এসময় তার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরদিন সকালে বড় বনগ্রাম এলাকা থেকে ওই অটোরিক্সা চালকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, নিহত মুন্নার পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে।

নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, গ্যারেজে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়ে মালিকদের বলা হচ্ছে। রাতে নির্জন, অপরিচিত জায়গায় বা যাত্রী না তোলাই ভাল। এছাড়া প্রতিটি গাড়িতে সুপার সিকিউরিটির ব্যবস্থার রাখতে হবে। হতে পারে তালা লাগানো বা জিপিআরএস ব্যবহার।

স/আ